এই তো সেদিন মাত্র! অথচ কতকাল গত হয়ে গেল
আমাদের ছিলো নাড়ার আগুনে মাসকলাই সিদ্ধ করে খাওয়ার সংসার
আমি কেবল কয়েকটি শুকনো খড়কুটো সংগ্রহ করে দিয়েই খালাস
অধৈর্য নিয়ে বারংবার উদোম করেছি মাটির তৈরি ঠুলিমুছির ঢাকনা
সেদ্ধ জলের গরম ভাপ ওঠা লোনতা স্বাদ আমার বড় প্রিয় ছিলো
এদিকে মুলি বাঁশের চুঙায় ফুঁ দিয়ে আগুন তাতাতে
তোমার গর্মাক্ত নাকে মুখে বয়েছে জলের ধারা।
এভাবেই কৈশোর-যৌবনের যুগসন্ধিক্ষণে
আমি তখন গ্রামের যাত্রাদলের সর্ব কনিষ্ঠ অভিনতা
কপালে কব্জিতে লাল কাপড় বেঁধে বন্দনা গীত গাই
পাকিস্তান যে ছিল আগে এখন স্বাধীন বাংলাদেশ, স্বাধীন দেশ..
গর্ব-অহঙ্কারে তোমার বুকের স্ফীতি তখন পাহাড় সম
আবার বিউটি সাঁজঘরের কারিশমায় প্রমিলারূপী একজন ছেলেকেই
চিনতে না পেরে, মেয়ে ভেবে আমার বিপরীতে রং ঢং করতে দেখে
হিংসায় তোমার পিত্তি জ্বলে খাক হতো, ফুঁসেছো বাঘিনীর মতো
অথচ একদিন তুমিই কেমন সুবোধ লক্ষী মেয়ের অবিধা নিয়ে
কপালে টিকলি আর গায়ে লাল শাড়ি পড়ে পা রাখলে পালকিতে।
ছয় বেয়ারার পালকি তোমাকে নিয়ে গেল সুদূরে..
আমি অসহায়ের মতো শুধু পথ চেয়েছিলাম
আজও পথ চেয়ে থাকি আর ভাবি সেই সুদূর কি অনেক দূরে!