অজ্ঞাত এক নারী, বয়স ৩০-এর কাছাকাছি। গত কয়েক মাস ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুণ্ডা বাজারে রাস্তায় ঘুরাঘুরি করেছে। মাথায় চুলের জটলা পাকানো ওই নারী কারো সঙ্গে কথা বলতেন না, রাত্রিযাপন করেন রাস্তার পাশে।
গত রোববার (৭ আগস্ট) মধ্যরাতে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীর চিৎকারে আশপাশের মানুষ এসে দেখেন প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছেন। পরে স্থানীয় এক নারীর সহযোগিতায় তার ডেলিভারি সম্পন্ন হয়। জন্ম নেয় এক কন্যাসন্তান।
স্থানীয়দের ধারণা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় ওই নারী কারো দ্বারা গর্ভবতী হয়ে থাকতে পারেন।
এদিকে সন্তান জন্মদানের পর মা ও মেয়ে উভয়ই প্রায় ১৬ ঘণ্টা পড়েছিল রাস্তার পাশে। মানসিক ভারমাস্যহীন হওয়ায় ঠাঁই মেলেনি কারো ঘরে। পরে স্থানীয় এক যুবক ৯৯৯ কল দিলে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। জন্ম নেয়া ওই শিশুর ওজন কম হওয়া ও অপুষ্টির সমস্যা থাকায় জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে উন্নত চিকিৎসার জন্য।
৯৯৯-এ কল দেওয়া ঢাকা কলেজ ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী জাকারিয়া জানান, রাস্তায় সন্তান প্রসব হওয়ার পর মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী ও তার সন্তান রাস্তায়ই পড়েছিল ১৬ ঘণ্টার মতো। পরে আমি কোনো উপায় না পেয়ে ৯৯৯-এ কল দেই। পুলিশ চৌকিদারের মাধ্যমে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। মহিলাটিকে কেউ চিনতে পারেনি। নিজেও কিছু বলে না।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রাকেশ পাল বলেন, আমরা মহিলাটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। ডাক্তারের পরামর্শে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। জেলা সমাজসেবা অফিসকেও বলা হয়েছে, তারাও মহিলাটি ও তার সন্তানকে সব ধরনের সহযোগিতা করবেন।
নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অভিজিত রায় বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী জন্ম দেওয়া শিশুর অপুষ্টিজনিত সমস্যা রয়েছে। শিশুটির ওজনও কম। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আরও ভালো চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।