শাহাদাত হোসেন সোহেল,ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগরে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হলো পিঠা উৎসব। পিঠা উৎসবকে ঘিরে ফুটে উঠে গ্রামীণ ঐতিহ্য। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯ টায় শুরু হয় পিঠা উৎসব। চলে বিকাল পর্যন্ত। পিঠা উৎসবকে ঘিরে কয়েক হাজার ক্রেতা-বিক্রেতাদের মিলন মেলায় পরিণত হয় পিঠা প্রাঙ্গন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলা নাগরিক ফোরাম কতৃক আয়োজিত উপজেলার মির্জাপুব মোড়ে বেগম মরিয়ম মেমোরিয়াল মডেল স্কুল প্রাঙ্গণে পিঠা উৎসব যেন বর্ণিল রংয়ে মেতে উঠে। পিঠা উৎসব এর শুরু থেকেই ছিল দর্শনার্থীদের প্রচন্ড ভীড়। পিঠা উৎসবে বিভিন্ন স্টলে ছিল গ্রামীন ঐতিহ্যবাহী পিঠার বিশাল সমারোহ।
নৌকা, কাঁটা পিঠা, পাটি সাপটা, ঝুরি পিঠা, ঠোস পিটা, কুমড়া, করলা, মাশরুম, চট্রাপিঠা, দুধপুলি, ভাঁপাপিঠা, সইপিঠাসহ হরেক রকমের পিঠা খেতে নারী, পুরুষ ও শিশুদের ভীড় ছিল প্রতিটি স্টলে।
বিজয়নগর উপজেলা নাগরিক ফোরাম কতৃক আয়োজিত উৎসব মুখর পরিবেশে এই পিঠা উৎসব পালিত হয়। পিঠা উৎসবে প্রায় ১১ টি স্টল বসে। মঞ্চে উপজেলার বিভিন্ন কিন্ডারগার্টেন থেকে আগত শিশুদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ছিল অনবদ্য।
আয়োজকরা জানান, বাহারী পিঠার পসরা নিয়ে বসেন দোকানীরা। পিঠা উৎসবে দুধকলি, পাটিসাপটা, ঝুড়িকাটা, মুখচাপালি, সিদ্ধকলি, খিরপাটি সাপটা, দইলা পিঠা, ইলিশ কুলি, কদম কুলি সুন্দরী পিঠা ও নকশি কলি সহ বাহারনী নামে অনেক পিঠার পসরা নিয়ে বসেন দোকানীরা।
গত কয়েকদিন ধরেই বাড়িতে বসে এই পিঠা উৎসবকে সামনে রেখে গ্রামের নারীরা নানা ধরনের সুস্বাদু পিঠা তৈরি করেন।
আয়োজন সংগঠন সভাপতি আব্দুর রশিদ খাঁন এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাছিমা মুকাই আলী।
বিজয়নগর উপজেলা নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এস এম কামরুল হাসান শান্তের সঞ্চালনায় পিঠা উৎসব উদ্বোধন করেন বিজয়নগর উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার মোঃ মেহেদী হাসান খাঁন শাওন।
আনন্দ ভাগাভাগি করতে প্রতি বছরই পিঠা উৎসবের আয়োজন করার দাবী জানান অতিথি ও দর্শনার্থীরা। পিঠা উৎসবে বাহারী নামের শতাধিক ধরনের সু-স্বাদু পিঠা বিভিন্ন স্টলে উপস্থাপনের পরে দর্শনার্থীদের কাছে পিঠা বেচা-কেনা করা হয়।অনেকে নিজে পিঠা খাওয়ার পাশাপাশি আবার পিঠা কিনে নেন আত্মীয় স্বজনদের জন্য উপহার সামগ্রী হিসেবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জিয়াউল হক বকুল, চান্দুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ এম শামীউল হক চৌধুরী, হরষপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী সালাহউদ্দিন সেলিম, ইছাপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুরুল আমিন, উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি হালিমা চৌধুরী, ইসলামপুর আলহাজ্ব কাজী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম কলেজের সিনিয়র শিক্ষক মোঃ নাসরুম আহমেদ ও ফখরিয়া আহমেদ, প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির বিজয়নগর উপজেলা শাখার সভাপতি এ বি এম মোর্শেদ কামাল, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবু হানিফ, বিজয়নগর উপজেলা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন এর সভাপতি মোঃ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেলিম মৃধা স্বাস্থ্য সহকারী এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহীন আলম, বিজয়নগর উপজেলা পূজা উৎযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ কার্তিক চৌধুরী, স্বজন সমাবেশ বিজয়নগর উপজেলা শাখার সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন রুবেল প্রমুখ।
অতিথিদের সাথে তাঁদের আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের লোকজন এই পিঠা উৎসবে যোগ দেন। এতে পিঠা উৎসব হয়ে উঠে আরো প্রানবন্ত।
পরে ১১ টি স্টলের মাঝে কতো প্রকার পিঠা, পিঠার স্বাদ কেমন, স্টলের সাজসজ্জার ও উপস্থাপন ক্যাটাগরির মাঝে বিচার কার্য শেষে বুধন্তী মডেল স্কুল কে প্রথম, বেগম মরিয়ম মেমোরিয়াল মডেল স্কুল কে দ্বিতীয় ও মায়ের দোয়া ক্লাবকে তৃতীয় নির্বাচিত করা হয়। এবং সকল স্টলকে অংশগ্রহণ করায় শুভেচ্ছা স্মারক উপহার প্রদান করা হয়।