তখন’ই হয়তো লুকিয়ে বই পড়ার বয়স। ক্লাস সেভেন কিংবা এইটে পড়ি। একদিন কার কাছ থেকে মলাট ছাড়া একটা বই হাতে এলো। বইয়ের ভিতরের পাতায় বইয়ের নাম লেখা ‘চলে যায় বসন্তের দিন’। লেখক “হুমায়ূন আহামেদ”। সেই শুরু, তারপর একের পর এক আলোর জগতে হেঁটে চলা। সাদামাটা একঘেয়ে চেহারার চাঁদের দিকে তাকানো। নিতান্ত আটপৌরে জ্যোৎস্না থেকে গৃহত্যাগী জ্যোৎস্নার উপলব্ধি। ক্লাস ‘এইম ইন লাইফ’ রচনা লিখতে গিয়ে ‘মিসির আলী’ হতে চাওয়া। গভীর রাতে ঘুম থেকে জেগে উঠে নিজেকে ‘হিমু’ ভেবে বসা।পকেট ছাড়া হলুদ পাঞ্জাবি,খালি পা,নিয়ন বাতির শহর হেঁটে চলা – একাকী।
শুভ্রর চশমা চোখে দিয়ে পৃথিবীর দিকে তাকানো।অথবা কোথা ও কেউ নেই! কেবল আছেন ‘বাকের ভাই’ আর তাঁর হাওয়া মে উড়তা যায়ে,মেরা লাল দুপাট্যা মল মল হে বাজে….।
নির্লজ্জের মতো ধারাবাহিক প্রেমে তো তখন ই!আজ ‘নবনী’ তো কাল ‘রুপা’ আবার পরশু ‘মৃণ্ময়ী’। হা-হা-হা! এই মায়াময় সুন্দর চরিএ গুলোর প্রেমে না পড়ে কী উপায় আছে?
অথচ কী আশ্চর্য!
সেই মানুষের সঙ্গে সামনা-সামনি দেখা হওয়ার আগেই সময় ফুরিয়ে গেল।উনি চলে গেলেন।
৬৩বছর বয়স কী এতটাই বেশী?
যখন নুহাশ পল্লীতে গেলাম তখন তিনি নেই। বাকী সব আছে। লিচু গাছ,বৃষ্টি বিলাস, ভূত বিলাস,গাছের ওপর বাড়ি-সব।
দিঘি লীলাবতী টা ও আছে। শুধু উনি নেই।
এখনো প্রতি পূর্ণিমার প্রতি রাতে গৃহত্যাগী জ্যোৎস্নার আলোয় চারপাশ আলোকিত হয়ে ওঠে।কেবল জ্যোৎস্না পাগল সে মানুষ কে কোথাও দেখা যায়। নেই তিনি কোথাও তিনি নেই।
আপনার প্রয়াণ দিবসে প্রাণ উজাড় করা শ্রদ্ধা , ভালো থাকবেন…