রাজধানীর খুচরা বাজারে গত ৭ দিনের ব্যবধানে ১৭ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এগুলো হচ্ছে- সয়াবিন তেল, পাম অয়েল, আটা, ময়দা, মসুর ডাল, হলুদ, চিনি, এলাচ, দারুচিনি, ব্রয়লার মুরগি, আদা, তেঁজপাতা, শুকনা মরিচ ও ডিম। পাশাপাশি নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত এমএস রডেরও দাম বেড়েছে।
দামবৃদ্ধির এ চিত্র বৃহস্পতিবার সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারদর শীর্ষক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, কাওরান বাজারসহ ১৩টি খুচরা বাজার থেকে পণ্যের দাম যাচাই করে টিসিবি এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
এতে বলা হয়েছে, ৭ দিনের ব্যবধানে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলে ২ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ, প্রতি লিটার পাম অয়েল (লুজ) ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ও পাম অয়েল (সুপার) ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ দাম বেড়েছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি খোলা আটা ৫ শতাংশ ও প্যাকেটজাত আটায় ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত ময়দায় দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৩ শতাংশ, মাঝারি আকারের মসুর ডালে দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ, দেশি হলুদ ১৭ দশমিক ১৪ শতাংশ, চিনি ৬ দশমিক ২৯ শতাংশ, দারুচিনি ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৪ শতাংশ, দেশি আদা ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশ, তেজপাতা ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। এছাড়া প্রতি কেজি শুকনা মরিচের দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ ও ৭ দিনের ব্যবধানে প্রতি হালি (৪ পিস) ডিমে ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ দাম বেড়ে রাজধানীর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি নির্মাণ পণ্যের মধ্যে এমএস রড (৬০ গ্রেড) প্রতি টনের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ১৬ শতাংশ। রাজধানীর বেশ কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে বৃহস্পতিবার এসব পণ্যের কোনো সংকট লক্ষ্য করা যায়নি। বরং প্রত্যেকটি দোকানে সরবরাহ পর্যাপ্ত ছিল। রাজধানীর কাওরান বাজারের মুদি বিক্রেতা মো. আলাউদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, পণ্যের যে সংকট আছে তা কিন্তু নয়। পাইকারি বাজারেও বেশ সরবরাহ আছে। আমরা খুচরা বিক্রেতারাও এ সব পণ্য চাহিদামতো কিনে খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করতে পারছি। কিন্তু আমাদের বেশি দামে আনতে হচ্ছে বিধায় বাড়তি দরে ক্রেতার কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার যুগান্তরকে জানান, রাজধানীসহ সারা দেশে করোনাকালে পণ্যের দাম ভোক্তা সহনীয় রাখতে তদারকি করা হচ্ছে। তবে খোঁজ পেয়েছি বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়েছে। কেন দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তা তদারকি করা হচ্ছে। মোকাম থেকে শুরু করে পাইকারি ও খুচরা বাজারে দামের তারতম্য দেখা হচ্ছে। কারা কি দামে এনে কত দরে বিক্রি করছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনো অনিয়ম পেলে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হবে।
টিসিবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১২৪-১২৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা ৭ দিন আগে ছিল ১২০-১২৫ টাকা। প্রতি লিটার লুজ পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে ১১৪-১১৬ টাকা, যা ৭ দিন আগে ছিল ১০৬-১১২ টাকা। প্রতি কেজি খোলা আটায় ২ টাকা বেড়ে সর্বোচ্চ ৩৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি প্যাকেটজাত ময়দা ২ টাকা বেড়ে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকারের মসুর ডাল কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি হলুদ কেজিতে ২০-৪০ টাকা বেড়ে সর্বোচ্চ ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিনি ৭ দিনের ব্যবধানে কেজিতে ২-৭ টাকা বেড়ে মানভেদে ৭৫-৭৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দারুচিনি কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে ৪০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি আদা কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকায় এবং তেজপাতা ২৫ টাকা বেড়ে কেজি ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।