জীবজগতের বৃহত্তম স্থলচর স্তন্যপায়ী প্রাণী হাতি। নগরায়ন এবং বনাঞ্চল ধ্বংসের কারণে একদিকে যেমন নষ্ট হচ্ছে হাতির বিচরণভূমি। অন্যদিকে, কালোবাজারি ও চোরাকারবারীদের শিকারে পরিণত হয় বিলুপ্ত হচ্ছে প্রাণী জগতের এই বৃহত্তম স্থলচর প্রাণী হাতি। তাই জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে ২০১২ সালে ক্যানাডিয়ান চলচ্চিত্র নির্মাতা প্যাট্রিসিয়া সিমস ও মাইকেল ক্লার্ক এবং থাইল্যান্ডের এলিফ্যান্ট রিইন্ট্রোডাকশন ফাউন্ডেশনের প্রধান শিভাপর্ন দারদারানন্দ৷ বিশ্ব হাতি দিবস প্রতিষ্ঠা করে। এরপর থেকে ১২ আগস্ট বিশ্ব হাতি দিবস পালিত হয়।
একটা সময় পৃথিবীজুড়ে কয়েক শ’প্রজাতির হাতির বিচরণ থাকলেও কমতে কমতে তা এখন নেমে এসেছে মাত্র চারটিতে। এর মধ্যে দুটি আবার বিলুপ্তপ্রায়। এক সময় এশিয়া এবং আফ্রিকায় প্রচুর হাতি ছিলো তবে বিংশ শতাব্দীতে এদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে৷ ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচারের তথ্য অনুযায়ী হাতি রদাঁতের অবৈধ ব্যবসা এর মূল কারণ৷
ডব্লিউ ডব্লিউ এফ এর সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীতে আনুমানিক ৪৪০,০০০ টি হাতি রয়েছে, যার মধ্যে আফ্রিকায় রয়েছে ৪১৫,০০০ টি হাতি। যেখানে একশ’ বছর আগে আফ্রিকায় মোট এক কোটি হাতি ছিল। এশিয়ায় আছে মাত্র ৩৫ থেকে ৪০ হাজার হাতি।
গত দশ বছরে সারা বিশ্ব থেকে হাতি কমেছে ৬২ ভাগ। অনেকেরই আশঙ্কা আগামী দিনে হাতি সংরক্ষণ এবং গ্রামবাসীদের হাতে হাতি নিধন ও চোরাশিকারীর উপদ্রব কমাতে না পারলে বিশাল দেহের ডাইনোসরের মত বিলুপ্ত হবে হাতিও। স্থলচরদের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রাণী হাতিও এখন বিলুপ্ত হওয়ার শঙ্কায়। এই নিয়ে বিশ্ব জুড়ে চলছে আলোচনা। শঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রাণী বিশ্লেষকরা। ধারণা করা হচ্ছে, প্রতি বছর যে হারে হাতি কমছে, তাতে ১০ বছর পর চিড়িয়াখানা ছাড়া আর কোথাও এই প্রাণীর অস্তিত্ব থাকবে না। ডব্লিউ ডব্লিউ এফ এর আরেকটি তথ্য অনুযায়ী প্রতি বছর প্রায় ১৫,০০০ হাতি শিকারীদের দ্বারা শিকার হচ্ছে।
পৃথিবীতে দুই ধরনের হাতি দেখা যায়। এশিয়ান হাতি এবং আফ্রিকান হাতি। আফ্রিকান হাতিদের পুরুষ এবং মহিলা উভয়েরই দাঁত থাকে। এশিয়ান হাতির মধ্যে কেবল পুরুষ হাতিরই দাঁত আছে। হাতি ১২ বছর বয়সে সন্তান প্রসব করতে পারে। তবে প্রাণী জগতের সবচেয়ে দীর্ঘতম সময় ২২ মাস গর্ভধারণের পর হাতি সন্তান প্রসব করে।