আখাউড়ায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মাকে কুপিয়ে হত্যা: ছেলের স্বীকারোক্তি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 3 January 2022, 271 বার পড়া হয়েছে,
আদিত্ব্য কামাল : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের শান্তিনগর গ্রামে বৃদ্ধা জোহরা খাতুন হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ বলছে, প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য বৃদ্ধা জোহরা খাতুনের ছেলে জমির খাঁ নিজের মা’কে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন।

সোমবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল ইসলামের আদালতে ঘাতক জমির খাঁ তার মাকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। স্বীকারোক্তি শেষে জমির খাঁকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আখাউড়া থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান জানান, আখাউড়া পৌরশহরের শান্তিনগর গ্রামে বাড়ির সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত জমির খাঁর সঙ্গে তার চাচা প্রতিবেশী বজলু খাঁর মাঝে বিরোধ চলে আসছে। আদালতের রায়ে জমির খাঁর পক্ষকে বাড়ির সম্পত্তির দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

সম্পত্তির দখল বুঝে পেলেও প্রতিপক্ষ বজলু খাঁ ও তার লোকজন সম্পত্তি ফিরে পেতে জমির খাঁকে মিথ্যা মামলা হামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছিল। ওই সব কারণে প্রতিপক্ষ বজলু খাঁকে ফাঁসাতে পরিকল্পনা আঁটেন জমির খাঁ।

রবিবার সকাল থেকে সম্পত্তির জের ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। দুপুরের দিকে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে জমির খাঁ তার বৃদ্ধা মা’কে দা দিয়ে মাথায় কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় হত্যার পর রক্তমাখা দা ঘরের সিলিংয়ের ওপর রেখে দেয় জমির খাঁ। নিহতের রক্তাক্ত লাশ ওই ঘরের এক কোণে পড়ে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

লাশ দেখে পুলিশসহ স্থানীয় লোকজনের হত্যা নিয়ে সন্দেহ হয়। পরে পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করে। রবিবার সন্ধ্যায় নিহত জোহরার ছেলে জমির খাঁসহ প্রতিপক্ষের ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের কথাবার্তায় গরমিল থাকায় পুলিশের সন্দেহ গভীর হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে জমির খাঁ সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে তার বৃদ্ধা মাকে হত্যার কথা স্বীকার করে।

পরে সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল ইসলামের আদালতে ঘাতক জমির খাঁ তার মা’কে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

স্থানীয় ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ জান্নাত হোসেন ঈশান জানান, হত্যাকাণ্ডের পর লাশ দেখে অনেকেই সন্দেহ করেছিল। পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটন করায় অনেক নিরীহ মানুষ হয়রানি থেকে বেঁচে গেল।