
আবদুল মতিন শিপন : সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা আর মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিবেদিত করার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্তের নাম কোহিনূর আক্তার প্রিয়া। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পশ্চিম মেড্ডা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী এই সমাজকর্মী তার জীবন উৎসর্গ করেছেন অসহায়, দুঃস্থ ও বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। একাধারে তিনি মানবাধিকারকর্মী, স্বেচ্ছাসেবক, সংগঠক ও অনুপ্রেরণাদায়ী একজন মানুষ। তাঁর কাজ, তাঁর চিন্তা ও তাঁর জীবনদর্শন—সব কিছুতেই প্রতিফলিত হয় মানবিকতার পরম দ্যুতি।
ছোটবেলা থেকেই মানুষের দুঃখ-দুর্দশা তাকে ভাবাতো। পরিবার থেকে পাওয়া নৈতিক শিক্ষা, সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং মানবিক চিন্তাধারার সমন্বয়ে গড়ে ওঠে তার ব্যক্তিত্ব। শিক্ষা জীবন শেষে তিনি শুধু পেশাগত দায়িত্বে আবদ্ধ না থেকে সমাজসেবাকে বেছে নেন নিজের জীবনের মূল লক্ষ্য হিসেবে। সমাজের জন্য কাজ করাকে জীবনের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেন তিনি।
কোহিনূর আক্তার প্রিয়া যুক্ত আছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ও সক্রিয় সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে। ‘প্রাউড অব ব্রাহ্মণবাড়িয়া’, ‘স্বপ্নের ব্রাহ্মণবাড়িয়া’, ‘রক্তের সন্ধানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া’—এই সংগঠনগুলোতে তিনি নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা পালন করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। এসব সংগঠনের মাধ্যমে তিনি সমাজে রক্তদান সচেতনতা, অসুস্থ রোগীদের জন্য জরুরি রক্তের ব্যবস্থা, পথশিশু ও দরিদ্র পরিবারের মাঝে খাদ্য ও বস্ত্র বিতরণ, এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচি পরিচালনা করে থাকেন।
বিশেষ করে ‘রক্তের সন্ধানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তিনি অসংখ্য মানুষের প্রাণ বাঁচাতে ভূমিকা রেখেছেন। রাত-দুপুরেও রক্তের খোঁজে যিনি ছুটে গেছেন হাসপাতাল থেকে ক্লিনিকে, সেই মানুষটি হলেন কোহিনূর আক্তার প্রিয়া। তিনি বিশ্বাস করেন, “মানুষের পাশে দাঁড়ানোই সবচেয়ে বড় ইবাদত।” তার এই অটল বিশ্বাস থেকেই তিনি নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
তরুণ প্রজন্মকে সমাজসেবায় উদ্বুদ্ধ করতেও তার রয়েছে অনবদ্য ভূমিকা। নানা সময় স্বেচ্ছাসেবী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, তরুণদের নেতৃত্ব বিকাশমূলক সেমিনার ও মানবিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে তিনি যুক্ত হয়েছেন। নারী সমাজের ক্ষমতায়ন, আত্মনির্ভরতা অর্জন এবং সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়েও তিনি সোচ্চার।
ব্যক্তিজীবনে তিনি অত্যন্ত নম্র, মমতাময় ও আন্তরিক এক নারী। তাঁর জীবনযাপন সরল, কিন্তু চিন্তা-চেতনায় তিনি দৃঢ় ও অনন্য। সমাজের ভালো-মন্দ, মানুষের হাসি-কান্না সবকিছুর সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে তার হৃদয়। তারই কারণে আজ অনেক মানুষ তাকে শুধু একজন সমাজকর্মী নয়, বরং একজন “মানবিক নেত্রী” হিসেবে মূল্যায়ন করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় এমন একজন নারীর উপস্থিতি শুধু গর্বের নয়, বরং অনেকের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। ভবিষ্যতে তিনি যেন সমাজের এই মানবিক আন্দোলনকে আরো বিস্তৃত করতে পারেন, সেই প্রত্যাশা করেন সবাই।