মো. আজহার উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ফেসবুক ভিত্তিক মানবিক ও সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ব্রাহ্মণবাড়িয়া হেল্পলাইন এর চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ১৬ সামাজিক সংগঠনকে সম্মাননা ও স্বেচ্ছাসেবীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে জেলা শহরের কাউতলী এলাকায় স্বপ্নতরী হলরুমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সংগঠনের সভাপতি বাইজিদ আহমেদ ফারদিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি অনার্স কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু জাফর মোহাম্মদ আরিফ, বিশেষ অতিথি সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিল্লাল হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া হেল্পলাইনের উপদেষ্টা রবিউল খাঁন প্রমুখ।
প্রধান অতিথি প্রফেসর আবু জাফর মোহাম্মদ আরিফ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘এই সময়ে আমরা সবাই খুব ভালোভাবে অনুধাবন করতে পেরেছি মানুষকে সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ করতে ভার্চ্যুয়াল প্লাটফর্ম গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যে যেখানে আছি, আমাদের কাজ সততা ও দক্ষতার সঙ্গে করব। দেশের প্রতি আমাদের মায়ামমতা ভীষণভাবে হ্রাস পেয়েছিলে। এই জায়গায় নিষ্ঠুর-নির্দয় হয়ে গিয়েছিলাম আমরা। দেশের মানুষের প্রতি নূন্যতম দায়িত্ববোধ বা দেশপ্রেম থাকলে আমরা এত টাকা–পয়সা দেশের বাইরে নিয়ে যেতে পারতাম না।’
বিশেষ অতিথিরা ছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন সংগঠনের উপদেষ্টা তাহমিনা উদ্দিন, প্রমিলা দাস, ফারিয়া তাসনিন বর্ষা, জুবায়ের আহমেদ শাওন, সজল খাঁন, তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদ, মোজাহিদ আরাবি প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ১৬টি সামাজিক সংগঠনকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়। সম্মাননা স্মারকপ্রাপ্ত সংগঠনগুলো হলো– ‘বেওয়ারিশ লাশের ঠিকানা’, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’, ‘ক্লিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া’, ‘লক্ষ্য আমাদের মানবসেবা’, ‘আলোকিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া’, ‘সেবা-ঐক্য ফোরাম বাংলাদেশ’, ‘রক্ত দানের অপেক্ষায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া’, ‘কসবা ব্লাড ফাউন্ডেশন’, ‘উদ্দীপন ব্লাড ব্যাংক’, ‘আস সিয়াজ ফাউন্ডেশন’, ‘প্রিয় পরিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া’, ‘আমরাই আগামীর চোখ’, ‘রক্তের খোঁজে ব্রাহ্মণবাড়িয়া’, ‘রেডি ডোনার প্লাটফর্ম বাংলাদেশ’, ‘কওমী ব্লাড ব্যাংক ব্রাহ্মণবাড়িয়া’, ‘বাঁধন (স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ইউনিট’, ‘উপশম ব্লাড ব্যাংক ব্রাহ্মণবাড়িয়া’। পরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটা হয়।
‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া হেল্পলাইন’ পথশিশু ও অসহায় রোগীদের আর্থিকভাবে সহায়তা করে আসছে। এছাড়া সংগঠনি ২৪ ঘণ্টা স্বেচ্ছায় রক্তদানসহ শীতবস্ত্র ও বছরে দুই ঈদে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে থাকা ছাড়াও মাদকবিরোধী কার্যক্রমে জনসচেতনতা তৈরি করার কাজ করছে সংগঠনটি।
এ প্রসঙ্গে ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া হেল্পলাইন’–এর প্রতিষ্ঠাতা গোলাম কিবরিয়া খাঁন বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য মানবিক কাজ করা। চার বছর যাবত সেটাই করে যাচ্ছি। আমাদের সংগঠন থেকে প্রতি বছর রমজানে অসহায় পরিবারের মধ্যে ইফতার বিতরণ করা হয়, শীতকালে কম্বল বিতরণ করা হয়, ঈদুল আজহার কোরবানি উপলক্ষে অসহায় পরিবারকে বাজার–সদাই করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি আমরা আরও বিভিন্ন মানবিক কাজ করে থাকি।