ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : বৃহস্পতিবার (০৪ জানুয়ারি) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজ মাঠে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ক্যাপ্টেন (অব.) এ. বি তাজুল ইসলাম এম.পি বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের দিনটি আপনাদের কাছে ধার চাই। এই দিনের ঋণ বোনাসসহ পরিশোধ করবো। জীবন দিয়ে হলেও মানুষের সমস্ত আশা-আকাঙ্খা পূরণ করবো। কথা দিচ্ছি, আমার জীবন গেলেও বাঞ্ছারামপুরের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে ছাড়বো; এটা আমার প্রতিশ্রুতি।
তিনি আরও বলেন, আপনারা আপনাদের ছেলেমেয়েকে পয়সা খরচ করে লেখাপড়া করান। আপনি চান আশি পাক, লেটার পাক, গোল্ডেন পাক। সে থার্ড ডিভিশন পেলে কি ভালো লাগে? আপনারা যখন আমাকে ভোটই দিবেন, তাহলে ৯৫ পার্সেন্ট ভোট দেবেন। আমি আপনাদের জন্য খাটিনি? সেবা করিনি? দিনরাত পরিশ্রম করিনি? এটা আমার অধিকার, আপনারা আমাকে ভোট দিবেন। শতকরা ৯৫ ভাগ ভোট যেন নৌকা পায় সেজন্য আপনারা কেন্দ্রে আসবেন, ঘরে বসে থাকবেন না। প্রত্যেকটা লোককে কেন্দ্রে যেতে হবে। কোনো গাফিলতি চলবে না। আপনারা ওয়াদা করেছেন, ওয়াদার বরখেলাফ করলে পাপ হবে। বিএনপি-জামায়াত যে অপপ্রচার করেছে এ সমস্যা বাঞ্ছারামপুরে নেই।
তিনি বলেন, এই বাঞ্ছারামপুরে আপনারা জানেন বিএনপির সময়ে আমার নিজের বাড়িতে যাওয়ার সময় আমার গাড়িতে হামলা-আক্রমণ করেছিল। আমার মায়ের লাশ নিয়ে বাঞ্ছারামপুরে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম, বাঁধা দেওয়া হয়েছিল। এরপর আমরা ক্ষমতায় এসেছি। সেই তুলনায় আমরা খারাপ ব্যবহার করিনি, ভালো ব্যবহার করেছি। আমি নিশ্চিত বাঞ্ছারামপুর থানা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যে আচরণ করেছে, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি তারা কেন্দ্রে এসে ভোট দেবে। অনন্য নজির সৃষ্টি করবেন।
জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বাঞ্ছারামপুরের মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখার কথা উল্লেখ করে বলেন- ক্যাপ্টেন তাজ যে কথা দেয়, সেই কথা বাস্তবায়ন করে। আমি কথা দিয়েছি, আমার জীবন গেলেও বাঞ্ছারামপুরের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে ছাড়বো। নির্বাচন আসে পাঁচ বছরের জন্য। ১৮২৬ দিন লাগে পাঁচ বছর হইতে, লিপ ইয়ার হলে একদিন বাড়ে। আমি তো আপনাদের সন্তান এবং ভাই হিসেবে বিগত ২০ বছর ধরে আপনাদের সেবা করে যাচ্ছি। সেই সেবার সূত্র ধরে আগামী পাঁচ বছর আপনাদের সেবা করার জন্য আমি কি একটি দিন ধার চাইতে পারি না? একটা দিন মানেই ৭ জানুয়ারি আপনাদের কাছে ধার চাই। এই এমন একটা দিন যদি আমাকে দেন, আমি এর বিনিময়ে আমার জীবন দিয়ে হলেও আপনাদের আশা আকাঙ্খা সমস্ত কিছু দেখভাল করে ওই একদিন বোনাসসহ ফেরত দেব, এটা আমার প্রতিশ্রুতি।বাঞ্ছারামপুরের জনগণ রাজনীতি সচেতন এবং উৎকৃষ্ট জনগণ। আমাদের মানুষ নির্বাচন বুঝে, নির্বাচনকে তারা সঠিকভাবে ধারণ করে এবং গ্রহণ করে। আমরা চেষ্টা করেছি নির্বাচনে কিভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে পারে।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি প্রিন্সিপাল আবুল খায়ের দুলাল, পৌর মেয়র মো. তফাজ্জল হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সায়েদুল ইসলাম ভূঁইয়া বকুল, জাহাঙ্গীর ওয়াজেদ, সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. কবির হোসেন, মাসুদ করিম সাজু, মহসিনুল হাসান বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী জাদিদ আল রহমান জনি, ছয়ফুল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম তুষার, দরিকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের মির্জা সফিকুল ইসলাম স্বপন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সনি আক্তার সুচি প্রমুখ।