এসময় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও শাহরাস্তি পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব আবদুল লতিফ প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বই বিতরণ উদ্বোধন করার পূর্বে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সোনার বাংলা গড়তে বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আর সোনার বাংলা গড়তে সোনার মানুষের প্রয়োজন। সেই সোনার মানুষ গড়তে বছরের প্রথমদিনে শিক্ষার্থীদের মাঝে ২০০৮ সাল থেকে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ করে আসছেন। তিনি সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে চাঁদপুর (শাহরাস্তি-হাজীগঞ্জ) -৫ আসনের সাংসদ মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এর ভূমিকার ভূষিপ্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এই এলাকার সকল উন্নয়নে মাননীয় সাংসদ যে অবদান রেখে আসছেন তার জন্য এই জনপদের মানুষ তাঁকে অনন্তকাল মনে রাখবে। ইতিহাসে তাঁর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল ফয়েজ। উক্ত অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন, বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ ইমাম হোসেন। বই বিতরণ উদ্বোধনের পূর্বে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠায় যারা অবদান রেখে পরলোক গমন করেছেন তাদের রুহের মাগফেরাত এবং বর্তমানে যারা অবদান রাখছেন তাদের সুস্বাস্থ্য সহ দুনিয়াবি জীবনে সফলতা ও কামিয়াবি করার জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন, বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মোঃ ফয়সাল আহমেদ।
বর্ণিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য শিল্পী সমীরণ দত্ত, কমিটির সদস্য মোঃ শরীফ পাটওয়ারী, মোঃ মাসুদ আলম পাটওয়ারী, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ হেদায়েত উল্লাহ পাটওয়ারী। উক্ত অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, বিদ্যালয়ের ক্রিড়া শিক্ষক গৌরঙ্গ মজুমদার।
এদিকে, পাশাপাশি থাকা একই ক্যাম্পাসের নাওড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসনে আরা বেগমের নেতৃত্বে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়। এসময় বিদ্যালয়ে কর্মরত সকল শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
‘শিক্ষা নিয়ে গড়ব দেশ শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে শাহরাস্তি উপজেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে পরিচালিত বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলে পালিত হয় বই উৎসব’২০২৩। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হুমায়ন রশিদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাজী রুহুল আমিন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মোঃ নুরুল ইসলাম প্রধানিয়া।
বর্ণিত অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ইমাম হোসেন মজুমদার।
এদিকে শাহরাস্তি পৌরসভার প্রাচিনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মেহার উচ্চ বিদ্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে বই উৎসব পালন করা হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মানিক লাল দত্ত। অনুষ্ঠানে কমিটির সদস্য মাসুদুল গনি পাটওয়ারী উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সনজিত কুমার সরকার।
বই উৎসব পালন প্রসঙ্গে এক প্রতিক্রিয়ায় প্রধান শিক্ষক সনজিত সরকার বলেন, বছরের প্রথমদিন নতুন বই হাতে পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে খোশমেজাজ লক্ষ্য করা গেছে। বর্তমান সরকারের এই উদ্যোগের ফলে দেশে শিক্ষার মান ও হার বাড়বে।
এদিকে, জাতীয় কার্যক্রমের অংশ হিসাবে উপজেলার ডাকাতিয়া নদীর দক্ষিণ পাড়ে চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের মনিপুর গ্রামের মনিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বই উৎসব পালন করা হয়েছে। এই বিদ্যালয়টিতে ২০১৪ সাল থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত চালু করা হয়েছে। এই বিদ্যালয়ে একই সাথে প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, শাহরাস্তি উপজেলায় এই প্রকৃতির ২টি বিদ্যালয় চালু রয়েছে।
এই বিদ্যালয়ের বই উৎসব পালন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, সমাজ সেবক ও বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সহ-সভাপতি আবদুর রহিম মিন্টু।এসময় বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আবুল কাসেম এবং হাসি আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন। এক প্রতিক্রিয়ায় প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, সরকার নতুন কারিকুলামে
১ম,২য়,৬ষ্ঠ এবং ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বই দেয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা প্রশংসার দাবি রাখে। সরকারের এই উদ্যোগ অনেক সফল ও কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য, নানা সংকটের মধ্যে সরকারের বিনামূল্যের পাঠ্যবই সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। তবে সব সংকট কাটিয়ে অবশেষে আড়ম্বরপূর্ণভাবে সারা দেশে বছরের প্রথম দিনে আজ রবিবার (১ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে পাঠ্যবই উৎসব। পুরো উপজেলার প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বই বিতরণের মাধ্যমে শুরু হয় এই উৎসব।
কেন্দ্রীয়ভাবে মাধ্যমিক পর্যায়ের বই উৎসবের উদ্বোধন করা হয়েছে গাজীপুরের কাপাসিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। ঐ বই উৎসবের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। আর কেন্দ্রীয়ভাবে প্রাথমিকের বই উৎসবের উদ্বোধন হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে। উদ্বোধন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ডলার সংকট, দাম ঊর্ধ্বমুখী, ছাপা সরঞ্জামের বাড়তি মূল্য লোডশেডিং, গ্যাস সংকটের কারণে বই উৎসব নিয়ে অনিশ্চয়তার বিষয়টি আলোচনায় আসে। তবে এসব পাশ কাটিয়ে বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে পাঠ্যবই। আগেই শাহরাস্তি উপজেলা সহ সারা দেশে অধিকাংশ বই পৌঁছে গেছে। বই পৌঁছে দেয়া হয়েছে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
এদিকে, মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ‘বই নিয়ে কোনও সংকট নেই। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) পর্যন্ত মাধ্যমিকে ৮০ শতাংশের বেশি বই প্রস্তুত ও সরবরাহ করা হয়েছে। কোনও উপজেলা বই পেতে বাকি নেই। যেখানে ১০০ সেট বই যাওয়ার কথা সেখানে হয়তো ৮০ থেকে ৮২ সেট বই গেছে। প্রাথমিকে এই মুহূর্তে ৮০ শতাংশের কম আছে। তবে গত শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) যে পরিমাণ বই গেছে তাতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে শনিবারের (৩১ ডিসেম্বর) মধ্যে ৯০ শতাংশ বই পৌঁছে যাবে।’
উল্লেখ্য, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে চার কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার ৩৮১ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে সাড়ে ৩৪ কোটির বেশি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে। এরমধ্যে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি মিলিয়ে এই স্তরে ৯ কোটি ৯৮ লাখ ৫৩ হাজার এবং মাধ্যমিক স্তরে স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি মিলিয়ে ২৪ কোটি ৬৩ লাখ ১০ হাজার কপি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষার বই ছাপা হচ্ছে দুই লাখ ১২ হাজার ১৭৭ কপি।গত শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) মধ্যে বেশিরভাগ বই সরবরাহ করা হয়েছে। অবশিষ্ট বই দ্রুত ছাপা হবে। বই উৎসব হবে আড়ম্বরপূর্ণভাবেই।
সরকার ২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ শুরু করে এবং এ পর্যন্ত মোট ৪৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২১১টি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হয়েছে।