প্রথমে প্রবাসীদের নাম্বার সংগ্রহ করে মোবাইলে প্রেমের অভিনয়, পরে অপহরণের করে অশ্লীল ভিডিও ধারণা করে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করে আসছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি চক্র। অবশেষে সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের গৌতম পাড়া থেকে এক চক্রের নারী-পুরুষসহ ৬জনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার বিকেলে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অর্থ) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন।
আটককৃতরা হলেন, ঘাটুরা এলাকার রেনু মুন্সির ছেলে আব্দুল আহাদ (৩৪), তার স্ত্রী ববিতা বেগম (৩০), মধ্যপাড়ার রবি বাবুর্চির ছেলে সাজন (৩১), সদর উপজেলার মজলিশপুরের কবির মিয়ার মেয়ে লিপি আক্তার (১৮), ভাদুঘর এলাকার মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে কথিত সাংবাদিক মশিউর রহমান (৪৩) ও শেরপুর এলাকার খায়রুল ইসলামের স্ত্রী মক্ষিরানী জুহুরা বেগম (২২)।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন জানান, গত ১৫ আগস্ট সরাইল উপজেলার অরুয়াইলের প্রবাসী শাকিল মিয়াকে অপহরণ করে একটি চক্র মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে তার পরিবারের সদস্যরা বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা অপহরণকারিদের পাঠালে আরও টাকা পাঠানোর জন্য বলে। না দেওয়া তাকে মারধর করে। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সহ পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে অবগত করেন। এরপর দিন একই এলাকার আরেক প্রবাসী সোবহান মিয়াকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে দুটি নাম্বারে কয়েকটি ধাপে ৬০হাজার টাকা আদায় করে অপহরণকারিরা। পরবর্তী ১৬ আগস্ট বিকেলে অপহৃত দুই প্রবাসীকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারিরা। দুজন ফিরে এসে তারা ঘটনার বিস্তারিত খুলে বলেন। এসময় তারা জানান, মেয়েদের মাধ্যমে মোবাইল প্রেমের ফাঁদে ফেলে এই চক্র। পরে দেখা করার কথা বলে তাদের অপহরণ করে আটকিয়ে রাখা হয়। এসময় উলঙ্গ করে ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করা হয়। পরিবারকে টাকা দিতে বলেন। পরে মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাদের নিয়ে অভিযান শুরু করে সরাইল থানা পুলিশ। অভিযানে সুহিলপুর ইউনিয়নের ঘাটুরা গৌতম পাড়া থেকে এই চক্রের ৬জনকে আটক করা হয়।
তিনি আরও জানান, এই চক্রের উদ্যেশ্য হচ্ছে প্রবাসীদের ফাঁসিয়ে মুক্তিপণ আদায় করা। এই চক্রের সাংবাদিক পরিচয়ধারী (সহ-সম্পাফক তিতাস বার্তা) মশিউর রহমানের মোবাইলের অনেকগুলো অশ্লীল ভিডিও পাওয়া গেছে। অপর অপরাধী সাজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে ৭টি মামলা রয়েছে। এসব ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।