নাসিরনগরে বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 23 June 2022, 96 বার পড়া হয়েছে,
জাকারিয়া জাকির : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ইতিমধ্যেই উপজেলার ১ হাজার ৫০০ পরিবারের প্রায় ৭ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে উপজেলার প্রায় ৩০ কিলোমিটার আধাপাকা ও পাকা সড়ক।

পানির তোড়ে উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের একটি ব্রিজ ভেঙে গেছে। পানিতে ভেসে গেছে উপজেলার প্রায় ৭০০ পুকুরের মাছ। সাড়ে ৪ হাজার রোপা আমন ধানের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।

উপজেলার ১২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭০টি বিদ্যালয়ের চারপাশে পানি উঠেছে।

কিছু বিদ্যালয়ের ভেতরেও পানি ঢুকেছে। ইতিমধ্যেই উপজেলার ২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বানভাসি মানুষের জন্য ২৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পানি বাড়তে থাকায় প্রতিদিন বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।

ইতিমধ্যেই প্রায় ৩০ কিলোমিটার আধাপাকা-পাকা সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। পানির তোড়ে উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের একটি ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় কয়েকটি এলাকার বাসিন্দা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলার বেশ কিছু কমিউনিটি ক্লিনিকও প্লাবিত হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার চাতলপাড়, ভলাকুট, গোয়ালনগর, বুড়িশ্বর, কুন্ডা, পূর্বভাগ, ধরমন্ডল, গোকর্ণ ও চাপরতলা ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকাই প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

বিকেল পর্যন্ত ওই সব আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ৬৬টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজহারুল হক বলেন, আমার ইউনিয়নটি হাওরের মধ্যে। হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী। আমার এলাকার সকল স্কুলকে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. ইকবাল মিয়া বলেন, উপজেলার ১২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭০টি বিদ্যালয়ের চারপাশে পানি উঠেছে। পানি বাড়তে থাকায় ২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তা, বিদ্যালয়ের আঙিনা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ২৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের ১২টি ও চাতলপাড় ইউনিয়নের ১০টি বিদ্যালয়ে যে কোনো সময় পানি ঢুকতে পারে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক বলেন, বন্যায় উপজেলার প্রায় সাড়ে চার হাজার হেক্টর বোনা আমন ধানি জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শুভ্র সরকার জানান, উপজেলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০০ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোনাব্বর হোসেন জানান, বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। প্রায় ১৫০০ পরিবারের ৭ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে গেছে। আশ্রয় নেওয়া পরিবারগুলোকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।