শেখ রাজেন,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : পেট্রোল বিক্রির জন্য কমপক্ষে পাকা মেঝেসহ আধাপাকা ঘর, ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক সক্ষমতা-সংক্রান্ত লাইসেন্স সহ অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার থাকার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সে নির্দেশনা উপেক্ষা করেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভারত সীমান্ত ঘেষা বিজয়নগর উপজেলায় যত্রতত্র পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে। যার ফলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
লাইসেন্স ছাড়া কোনো দোকানে পেট্রোল বিক্রি করার সুযোগ নেই। অথচ সরকারি নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিজয়নগর উপজেলার সর্বত্র ছোট-বড় বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে দাহ্য পদার্থ পেট্রোল। এতে যে কোন সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সর্বস্ব হারাতে পারে আশেপাশে থাকা বসতিদের। এভাবে পেট্রোল বিক্রি হওয়ায় সাধারণ মানুষ প্রতিটি মুহূর্তে আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায় আছে। বিজ্ঞ মহল মনে করেন যথাযথ প্রশাসনিক তৎপরতা প্রয়োজন।
সরেজমিনে দেখা যায়, চম্পকনগর বাজার, নোয়াগাও মোড়, পত্তন চকবাজার, বিষ্ণুপুর মোড়, রানওয়ে বাজার, মিরাশানী বাজারে ওষুধের দোকান, মুদি দোকান, কনফেকশনারী দোকান ও কাপড়ের দোকানে দুই লিটার, এক লিটার ও আধা লিটার ওজনের প্লাস্টিকের বোতলে দাহ্য পদার্থ পেট্রোল ভরে পসরা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। যে কেউ ইচ্ছা করলেই বোতলভর্তি পেট্রোল কিনতে পারে। যা ব্যবহার হতে পারে যেকোনো কাজে। এতে ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় ঘটতে পারে জীবননাশ সহ ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
উপজেলা গঠন হওয়ার আগে চম্পকনগর বাজারে দুটি পেট্রোল বিক্রেতার দোকানে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে আশেপাশে থাকা দোকান সহ কয়েক লক্ষ টাকা ক্ষতি সাধিত হয়েছে। পুষিয়ে উঠতে না পেরে দোকানি গুলো দেউলিয়া হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের পর মহব্বত আলী র পরিবার বাড়িঘর বিক্রি করে অন্যত্র চলে গেছে।
চান্দুরা সিঙ্গারবিল সড়কের পাশে থাকা এক পেট্রোল বিক্রেতা বলেন, আমরা ছোট ব্যবসায়ী। সারা দিনে অল্প কয়েক লিটার পেট্রোল বিক্রি করি। আইন সম্পর্কে আমাদের তেমন ধারণা নেই। লোকজনের চাহিদা থাকায় লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পেট্রোল এনে বিক্রি করি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এপর্যন্ত কোন নিষেধাজ্ঞা আসেনি।
বিজয়নগর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, ছয় মাস হল উপজেলাতে ফায়ার সার্ভিস এর সেবা চালু হয়েছে। আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনো উদ্বোধন হয়নি। দুজন লিডারের নেতৃত্বে এই অফিসের সেবা মূলক কার্যক্রম চলমান।
তিনি বলেন, দাহ্য পদার্থ বিক্রির লাইসেন্স না নিয়ে পেট্রোল বিক্রি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। উপজেলা প্রশাসন এবিষয়ে নজর দিলে দ্রুত বন্ধ করা সম্ভব।
বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ মির্জা মুহাম্মদ হাসান বলেন, বিস্ফোরক অধিদপ্তর থেকে লাইসেন্স না নিয়ে দাহ্য পদার্থ বিক্রি করা অপরাধ। যারা আইন না মেনে পেট্রোল বিক্রি করছে উপজেলা নির্বাহী মহোদয় এর সাথে আলোচনা করে, শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিস্ফোরক লাইসেন্স না নিয়ে পেট্রোল বিক্রয়কারী দোকান গুলোতে শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে। যারা নিয়মনীতি না মেনে পেট্রোল বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি দাহ্য পদার্থ পেট্রোল বিক্রয়কারীদের বিস্ফোরক লাইসেন্স গ্রহণে আবেদন করার পরামর্শ দেয়া হবে।