ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে লোকবল সংকটে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে হিমশিম খাচ্ছে উপজেলা নির্বাচন অফিস। ফলে সেবাগ্রহীতারা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। খবর যুগান্তরের।
সূত্রে জানা যায়, ১টি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা ও ২১টি ইউনিয়নের দুই শতাধিক গ্রাম নিয়ে গঠিত নবীনগর উপজেলা। চলতি হিসাবে উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৮৮ হাজার ৫৩৪ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটর ১ লাখ ৯৬ হাজার ২০৪ ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ৯২ হাজার ৩৩০ জন। এ উপজেলায় গত ২০২০-২০২১ সাল পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে কোনো ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম হয়নি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে উপজেলায় লক্ষাধিক নতুন ভোটার হওয়ার কথা। তাই প্রতিদিন উপজেলা নির্বাচন অফিসে শত শত মানুষ ভোটার সংক্রান্ত বিভিন্ন কাজে এসে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, লক্ষাধিক নতুন ভোটার নিবন্ধন ও উপস্থিত ভোটারদের সেবা প্রদানে উপজেলার নির্বাচন অফিসটিতে রয়েছে একজন নির্বাচন অফিসার, দুইজন ডাটাএন্টি অপারেটার ও একজন অফিস সহায়ক। গত এক মাস আগে অফিস সহায়ক পদে কর্মরত যিনি ছিলেন, তিনিও মারা গেছেন। মাত্র ৪ জন জনবল নিয়ে অনেক কষ্ট করে সেবা দিচ্ছেন উপজেলার নির্বাচন অফিস। তবে আয়তন ও বেশি জনসংখ্যার এ উপজেলায় জনসাধারণের চাহিদা মিটাতে হিমশিম খাচ্ছেন স্থানীয় নির্বাচন অফিস।
জানা যায়, নবীনগর উপজেলায় লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবিকার তাগিদে প্রবাসে অবস্থান করেন। তারা ছুটিতে দেশে এসে নতুন ভোটার হওয়াসহ বিভিন্ন কাজ নিয়ে নির্বাচন অফিসে আসেন। মহামারি করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রবাসফেরত অনেকে নির্বাচন অফিসে সেবা নিতে আসেন।
প্রবাসীসহ স্থানীয় অনেকেই জানান, ভোটর হওয়ার জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েও ভোটার হতে সময় লাগছে। অনেক লম্বা লাইন। অফিসটিতে জনবল কম থাকায় এ সমস্যার মূল কারণ। এছাড়া গত কয়েক বছর যাবত ভোটার তালিকা হালনাগাদ হয় না। মাঠপর্যায়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ হলে আমাদের এই কষ্ট আনেক কমে যেত। এলাকায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ অনেক জরুরি হয়ে পড়েছে।
নবীনগর পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট শিব শংকর দাস বলেন, মাঠপর্যায়ে এখন ভোটার তালিকা হালনাগাদ কাজ শুরু হলে জনসাধারণের এই ভোগান্তি অনেক কমে যাবে।
নবীনগর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. আলি আজগর জানান, ২১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিশাল উপজেলায় ভোটারদের মাত্র ৪ জন জনবল নিয়ে নতুন ভোটার নিবন্ধন, পরামর্শ, আবেদন, যাচাই বাছাই, স্মাট কার্ড বিতরণ, সংশোধনী কার্যক্রম ও সরজমিন তদন্তসহ নানা সেবা আমাদের সাধ্যমতো দিয়ে যাচ্ছি। তারপরও ভোটার তালিকা হালনাগাদ হলে সব মানুষের শতভাগ চাহিদা পূরণ হবে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা নির্বাচন অফিসার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, নবীনগর উপজেলা অনেক বড় উপজেলা। এখানে ভোটার সংখ্যাও অনেক বেশি। এখানে গত পাঁচ-ছয় মাস নির্বাচনের জন্য আমাদের সেবা দিতে একটু বিঘ্ন হয়েছে। আমরা দু-তিন মাসের মধ্যেই উপজেলায় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কাজ শুরু করব। তখন সব কিছুই স্বাভাবিক হয়ে যাবে।