দৈনিক নোয়াখালী প্রতিদিনের দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কলকাতার ‘দমদম মিউনিসিপ্যালিটি অডিটরিয়ামে’ আগামী ১৫ মে আয়োজন করা হয়েছে ‘বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর ৫১ বছর’ শিরোনামে এক আন্তর্জাতিক সেমিনার ও গুণীজন সংবর্ধনা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নামে উৎসর্গকৃত ‘বঙ্গবন্ধু পদক ২২’ এর জন্য বাংলাদেশের প্রখ্যাত কবি ও কথা সাহিত্যিক আমির হোসেনকে মনোনীত করেছে ‘নোয়াখালী প্রতিদিন’ কর্তৃপক্ষ।
কবি ও কথাসাহিত্যিক আমির হোসেন ১৯৭৩ সালের ৫ জানুয়ারি কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের গৌরনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মো. সুরুজ মিয়া ও মাতার নাম গুলবরের নেছা। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাঁর শিক্ষায় হাতেখড়ি। তিনি স্থানীয় কৃষ্ণনগর আব্দুল জব্বার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৯ সালে মাধ্যমিক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ থেকে ১৯৯১ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর ১৯৯৬ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে অনার্সসহ এমএসসি ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি ২০০৩ সালে বিএড ও ২০১৫ সালে এল এল বি ডিগ্রী অর্জন করেন।
নব্বই দশকের মাঝামাঝি থেকে তিনি লেখালেখির সাথে সক্রিয়। কবিতা, উপন্যাস, গল্প, প্রবন্ধ, গবেষণা, গ্রন্থালোচনা, সম্পাদনাসহ বহু গ্রন্থের প্রণেতা এ লেখক নিয়মিত লেখে যাচ্ছেন দেশ ও দেশের বাইরের অসংখ্য জাতীয় দৈনিকের সাহিত্যের পাতা, শীর্ষস্থানীয় সাহিত্যের ছোট কাগজ বা লিটল ম্যাগ, সাহিত্য সংকলন ও বিভিন্ন ম্যাগাজিনে।
তাঁর প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি- নিমন্ত্রিত তমসা (কবিতা), ঝরাফুলের সুরভি (উপন্যাস), দার্শনিক কবি মাশরেকী’র জীবন ও সাধনা (গবেষণা), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ইতিহাস (গবেষণা), জলময়ূরীর পেখম (গল্প), জলের গহীনে নীল জোছনা (কবিতা), মালালার আর্তনাদ (উপন্যাস), তোমার হরিণমায়া চোখ (গল্প), চালাক কুমির ও বোকা শেয়াল (শিশুতোষ গল্প), সিঁদুরের দেয়াল (উপন্যাস), রমেশ ঋষির সংসার (গল্প), ক্লান্তিহীন এক অভিযাত্রী মোকতাদির চৌধুরী (গবেষণা), ছোটদের বঙ্গবন্ধু (গবেষণা), সুখ নগরের সারথি (কবিতা), বাঁশির সুরে পরীর নাচ (শিশুতোষ গল্প), তিতাস পাড়ের গল্প (গবেষণা), মুক্তিযুদ্ধের গল্প (গল্পগ্রন্থ), মায়াবী মদিরাক্ষি (কবিতা), বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার (গবেষণা), অদ্বৈত’র তিতাস ও অন্যান্য প্রবন্ধ (গবেষণা) ও বৃহন্নলা (উপন্যাস), তিতাস বন্দনা (সম্পাদনা), শেখ রাসেল শৈশবে ঝরে যাওয়া ফুল (গবেষণা), হিরালী ও অন্যান্য গল্প (গল্পগ্রন্থ)।
শীঘ্রই প্রকাশিত হবে- চরকেদেরখোলা (নদী ভিত্তিক উপন্যাস), একশত ত্রিশঘর জলদাস (নদী ভিত্তিক উপন্যাস), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃতিজন (গবেষণা), সাহিত্য ও সঙ্গীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া (গবেষণা), বৃক্ষের কাছে ধর্মনিরপেক্ষতা শিখি (কবিতা), পৌরানিক প্রেমের গল্প (গল্পগ্রন্থ), আলোর শহরে তমিস্রার রাত (কবিতা) ইত্যাদি।
তিনি ২০০৮ সালে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার (স্বজন সমাবেশ) বর্ষসেরা লেখক সম্মাননা, ২০১৩ সালে তিতাস আবৃত্তি সংগঠন সম্মাননা পদক ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২০১৪ সালে জননী সাহিত্য পদক রাজশাহী, ২০১৪ সালে ইদ্রিস খান স্মৃতি সম্মাননা পদক- ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২০১৪ সালে কবি এম. আমজাদ আলী স্মৃতি পদক রাজশাহী, ২০১৫ সালে ‘মেঠোপথ’ সাহিত্য পদক- কিশোরগঞ্জ, ২০১৮ সালে বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী পুরস্কার ২০১৯ সালে সুমিতা সাহিত্যপত্র সম্মাননা- আগরতলা, ত্রিপুরা, ভারত, ২০২০ সালে কলকাতা-ঢাকা বঙ্গমৈত্রী পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত বঙ্গমৈত্রী পদক ও ২০২১ সালে কবির কলম সম্মাননা পদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া লাভ করেন।
অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী এই কবি, কথাসাহিত্যিক ও গবেষক শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের টি. কিউ. আই-সেপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আই. ই. আর. এর আওতায় সি. পি. ডি. প্রশিক্ষণের একজন মাস্টার ট্রেইনার (গণিত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি এশিয়াটিক সোসাইটি ঢাকা এর নিয়োগকৃত গবেষণা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।