নানারূপী দালালদের অপতৎপরতা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে। পথ থেকে রোগী ধরে, হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে রোগীদের নানা কথা বলে হাসপাতাল সংলগ্ন বেসরকারী হাসপাতাল ক্লিনিকে নেয়ার দালালদের কথা সবারই জানা, কিন্তু ভদ্র পোষাকী দালালদের চেনা দায়। শিক্ষিত দালালদেরও অভাব নেই হাসপাতালে। অথচ অভিযান হলে পেটের দায়ে আসা দালালদের আটকের খবরই প্রচার হয়। হাসপাতালের নানা অব্যবস্থাপনার অভিযোগ অনেক। সম্প্রতি এক ভুক্তভোগী রোগীর অভিযোগ থেকে জানা গেছে। হাসপাতালে টিকেট কাউন্টার, ডাক্তার দেখানোর লাইনের অবস্থানও টাকার বিনিময়ে হয়। এখানে ভদ্র পোষাকী অনেকে দাঁড়িয়ে থাকে এবং দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়ানো সাধারণ রোগীদের বঞ্চিত করে টাকার বিনিময়ে টিকেট সংগ্রহ এবং ডাক্তারের রুমে প্রবেশের সুযোগ করে দেয়।
ওষুধ কোম্পানীর স্মার্ট প্রতিনিধিদের অনেকের নানারকম দৌরাত্মও রয়েছে। চামড়ার ব্যাগ নিয়ে যখন তখন রোগী দেখার সময় তারা ডাক্তারদের রুমে প্রবেশ করে। চামড়ার ব্যাগে নানারকম উপঢৌকন সহ নানা কিছুর বিনিময় হয় রোগীদের চোখের সামনেই। উদ্দেশ্য ডাক্তাদের খুশী করে নিজের কোম্পানীর ওষুধ লিখিয়ে নেয়া। উপঢৌকন দিয়ে তারা কিন্তু ক্ষান্ত নন। তারা ডাক্তারদেরও নজরদারীতে রাখেন । দরজার পাশে অথবা বারান্দায় অবস্থান নেন। ডাক্তারের রুম থেকে রোগী বের হলে ভদ্রভাষায় রোগীদের কাছ থেকে প্রেসক্রিপশন চেয়ে নেন এবং চেক করেন , উপঢৌকনের বিনিময়ে যা কাঙ্খিত ছিল তা লিখা হয়েছে কিনা? এমনিতেই ডাক্তার রুমের সামনে রোগীদের ভীর, তার উপর বেশ কয়জন এমন প্রেসক্রিপশন চেকার যদি দাঁড়ায় সেখানে জটলা হবেই। রোগীরাও ব্রিবতকর অবস্থায় পড়ে। বিশেষ করে নারী রোগীরা। ভুক্তভোগী একজন রোগী এমন বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ,প্রিসক্রিপশন চেকারকে প্রশ্ন করেন, আপনি কে ? আপনাকে বারান্দায় প্রেসক্রিপশন দেখাব কেন? উত্তরে সেই চেকার বলেন, এটাই আমার চাকরী। নানাভাবে অনেক বুঝিয়েছি স্যারকে, স্যার আমাদের কোম্পানীর ওষুধ লিখেছেন কিনা তা একটু দেখবো। তবে সেই ওষুধ কোম্পানী বা প্রতিনিধির নাম জানা যায়নি। অসময়ে এবং জরুরী সময়ে সরকারী হাসপাতালে দালালীপনার এমন প্রকাশ্য খন্ড চিত্র নাকি প্রতিদিন এই অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী বেশ কয়জন রোগী। হাসপাতালের দেয়ালে “দালাল থেকে সাবধান” সাইনবোর্ড আছে ঠিকই, কিন্তু সাবধান বার্তা সম্পর্কে সাবধানতা সর্তকতা ও নজরদারী নেই অনেকের।
– সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ‘আল-আমিন শাহীন’ এর ফেইসবুক পাতা থেকে নেয়া।