
এহসানুল হক রিপন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ‘বিএফএফ সমকাল বিতর্ক উৎসব-২০২৫’-এর জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেবল বিদ্যালয়ের নয়, সমগ্র নাসিরনগরবাসীর মুখ উজ্জ্বল করেছে।
গতকাল শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় জেলার সাতটি খ্যাতনামা বিদ্যালয় অংশগ্রহণ করে। প্রথম রাউন্ডে নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজকে পরাজিত করে। দ্বিতীয় রাউন্ডে সাবেরা সোবহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়কে হারিয়ে তারা ফাইনালে ওঠে। ফাইনালে এক হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়কে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়নশিপ ট্রফি ঘরে তোলে আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বিতার্কিকরা।
এই প্রতিযোগিতার মূল বিতর্কের বিষয় ছিল—
“পলিথিন বন্ধের জন্য আইন নয়, সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।”
বিতার্কিকরা প্রাঞ্জল যুক্তি, তথ্য-উপাত্ত ও সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে বিচারক মণ্ডলীর মন জয় করেন।
বিজয়ী শিক্ষার্থীরা জানান, এ সাফল্য শুধু তাদের নয় বরং সমগ্র নাসিরনগর উপজেলার। বিশেষ করে বিদ্যালয়ের বিতর্ক প্রতিযোগিতার অভিজ্ঞ শিক্ষক লিটন বিশ্বাস স্যার-এর অবদানকে তারা গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা—জেলা পর্যায়ের এ অর্জনই হবে বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়ে আরও বড় সাফল্যের সোপান।
বিদ্যালয়ের বিতর্ক প্রশিক্ষক লিটন বিশ্বাস বলেন—
“আমাদের শিক্ষার্থীরা শুধু এবারই নয়, এর আগেও বহুবার জেলা, বিভাগীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করে নাসিরনগরের মুখ উজ্জ্বল করেছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের মতো জাতীয় মঞ্চেও আমরা বিজয়ী হয়েছি। আমি আশাবাদী, শিক্ষার্থীদের এ ধারাবাহিক প্রচেষ্টা ভবিষ্যতে আরও বড় সাফল্য বয়ে আনবে। শুধু একাডেমিক ফলাফলে নয়, সাংস্কৃতিক, সাহিত্য ও অন্যান্য প্রতিযোগিতাতেও তারা নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করে চলেছে।”
তিনি শুধু বিতর্ক শিক্ষক নন, রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান ও উচ্চতর গণিতেরও একজন দক্ষ শিক্ষক। তার শিক্ষা ও তত্ত্বাবধানের অবদানেই নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় উপজেলার এসএসসি ফলাফলের ক্ষেত্রেও সবসময় শীর্ষে রয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম বলেন—
“আমাদের শিক্ষার্থীদের এই সাফল্য সমগ্র নাসিরনগরের জন্য এক গৌরবের বিষয়। বিতর্ক, একাডেমিক ফলাফল কিংবা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড—সব ক্ষেত্রেই আমাদের শিক্ষার্থীরা ধারাবাহিকভাবে উৎকর্ষ প্রমাণ করে আসছে। এই অর্জন নিঃসন্দেহে ভবিষ্যতে আরও বড় অনুপ্রেরণা হয়ে কাজ করবে।
এই অর্জনে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ নাসিরনগরের সর্বস্তরের মানুষ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। সবাই একে নাসিরনগরের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের এক উজ্জ্বল গৌরবময় মুহূর্ত হিসেবে দেখছেন।