নিজস্ব প্রতিবেদক : কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের বিস্তার রোধে ১৫ দফা স্বাস্থ্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। বিশ্বজুড়ে খুব দ্রুত ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে বাংলাদেশেও শেষ কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন ওমিক্রন আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত করা হয়েছে।করোনার প্রথমদিককার মহামারীর সময়ের মতো এই ওমিক্রনের বিস্তার রোধেও যে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি ফিরিয়ে আনতে যাচ্ছে সরকার তা আগেই জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
মঙ্গলবার দুপুরে মন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পরপরই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা হয় নতুন এসব স্বাস্থ্য নির্দেশনা। তথ্য অধিদপ্তরের এক বিবরণীতে নতুন এসব নির্দেশনার কথা জানা যায়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রদত্ত ১৫ নির্দেশনা:
১. ওমিক্রন আক্রান্ত দেশ থেকে আগত যাত্রীদের বন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও স্ক্রিনিং জোরদার করতে হবে।
২. সকল ধরনের (সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয় ও অন্যান্য) জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে।
৩. টিকা নেওয়া থাকলেও বাইরে বের হলে অবশ্য মাস্ক পরতে হবে।
৪. প্রয়োজনে বাইরে গেলে প্রত্যেক ব্যক্তিকে বাড়ির বাইরে সর্বদা সঠিকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।
৫. সকল প্রকার জনসমাবেশ, পর্যটন স্থান, বিনোদন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার, সিনেমা হল/থিয়েটার হল ও সামাজিক অনুষ্ঠানে (বিয়ে, বৌভাত, জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি) ধারণক্ষমতার অর্ধেক বা তার কম সংখ্যক লোক অংশগ্রহণ করতে পারবে।
৬. মসজিদসহ সকল উপাসনালয়ে মাস্ক পরিধানসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে।
৭. গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে।
৮. আক্রান্ত দেশ থেকে আগত যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে হবে।
৯. সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (সকল মাদরাসা, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টারে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে।
১০. সকল স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সেবাগ্রহীতা, সেবাপ্রদানকারী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সর্বদা সঠিকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ সকল স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে।
১১. যারা এখনো কোভিড-১৯ এর টিকা গ্রহণ করেননি টিকাকেন্দ্র গিয়ে তাদের কোভিড-১৯ এর ১ম ও ২য় ডোজ টিকা নিতে হবে।
১২. রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়ার ব্যবস্থা ধারণক্ষমতার অর্ধেক বা তার কম করতে হবে।
১৩. অফিস প্রবেশ এবং অবস্থানকালীন বাধ্যতামূলকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা দাপ্তরিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
১৪. করোনা উপসর্গ/লক্ষণযুক্ত সন্দেহজনক ও নিশ্চিত করোনা রোগীর আইসোলেশন ও করোনা পজিটিভ রোগীর ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যান্যদের কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
১৫. কোভিড-১৯ এর লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা এবং তার নমুনা পরীক্ষার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে সহায়তা করা যেতে পারে।
করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের দ্রুত বিস্তার লাভ নিয়ে এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা আজ বলেছি আগামী ৭ দিনের মধ্যে বিধিনিষেধ প্রয়োগ করতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিবও এই বিষয়ে একমত হয়েছেন।
করোনা ভাইরাসের নতুন করে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাস করার জন্য কমিউনিটি পর্যায়ে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য জন্য মাইকিং ও প্রচারণাও চালানো যেতে পারে বলে জানানো হয় নির্দেশোনায়। প্রয়োজনে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডার মাইক ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়। এছাড়াও ওয়ার্ড কাউন্সিলর বা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের এই কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে।