ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিমে মারধর: এফআইআরে উল্লেখ নেই গোপন ভিডিও’র ধারা, জব্দ হয়নি মোবাইল

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 1 September 2023, 115 বার পড়া হয়েছে,
নিউজ ডেস্ক : ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি ব্যায়ামাগারে (জিম) গোপনে ভিডিও ধারণের প্রতিবাদ করায় এক গৃহবধূসহ দুইজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনায় তোলপাড় চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে প্রতিবাদের ঝড়। এই ঘটনা বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) ভোরে মামলা দায়েরের পর জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লব সহ তিন আসামী দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
তবে এই ঘটনা বাদির দায়ের করা এজহার অনুযায়ী সদর মডেল থানা পুলিশ মামলা নথিভুক্ত না করে একটি নরমাল মামলায় রূপান্তরের অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনায় মোবাইলে গোপনে ভিডিও ও ছবি তোলার কোন ধারা মামলা এফআইআর এ উল্লেখ করা হয়নি। পাশাপাশি জব্দ করা হয়নি ভিডিও ধারণে ব্যবহার করা আসামীদের মোবাইল ফোন।

এনিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন মামলার বাদি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের এপিপি মাসুদুর রহমান (সোহাগ)। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর কোন উপায় না দেখে আমি ৯৯৯: এ কল দিলে পুলিশ আসে। পরে সেখান থেকে আসামীদের আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় আমি উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের বলেছি, যেহেতু ঘটনার সূত্রপাত মোবাইলে ছবি-ভিডিও ধারণ করা নিয়ে তাই আসামীর মোবাইল জব্দ করুন। কিন্তু তারা আমার কথায় কর্ণপাত করেননি। শুধু বলছিলেন, সাথে কোন নারী পুলিশ সদস্য নেই। একটি মোবাইল জব্দ করতে নারী পুলিশ সদস্যের প্রয়োজন কি হয়! রাতে আমি থানায় লিখিত এজহারে বিস্তারিত উল্লেখ করে জমা দিয়েছি। সেখানে মোবাইলে ভিডিও ধারণের কথা বলা হয়েছে। সেই এজহারেই মামলাটি নথিভুক্ত করলেন। কিন্তু এফআইআরের প্রাথমিক তথ্য বিবরনীতে মোবাইলের ভিডিও ধারণের কোন বিষয় উল্লেখ নেই। আসামীদের বিরুদ্ধে শুধু মারধোর ও চুরির ধারা যুক্ত করে মামলাটি এফআইআর করা হয়েছে। আদালতে সেই বিষয়টি নজরে এসেছে।

এই বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানার পরিদর্শক সুমন চন্দ্র বনিক বলেন, ‘মোবাইলটিতে কিছু খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই সেই ধারা যুক্ত করা হয়নি। তাই মোবাইলটি জব্দ করা হয়নি।’ মোবাইল থেকে তো কেটেও ফেলা যায়। লিখিত এজহারে যেহেতু মোবাইলে ভিডিও করার অভিযোগ আনা হয়েছে, সেই অনুযায়ী মোবাইলটি জব্দ হওয়ার কথা৷ তা ফরেনসিকে পাঠানোর কথা। এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মোবাইলটি আমাদের এক সদস্যের কাছে। তা প্রয়োজনে জব্দ করা হবে।
এই বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘মামলাটি কোন ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, তা আমি অবগত নই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
উল্লেখ, গোপনে ভিডিও ধারণের প্রতিবাদ করায় দুই নারীসহ তিনজনকে গতকাল বুধবার (৩০ আগস্ট) সন্ধ্যায় জেলা শহরের মৌলভীপাড়ায় বিএস ফিটনেস ক্লাব নামক একটি জিমে পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লব, জিমের ফিটনেস ট্রেইনার মিতু আক্তারের বিরুদ্ধে দলবদ্ধ ভাবে মারধোরে অভিযোগ উঠে। ৯৯৯ এর কল পেয়ে এই ঘটনা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি বিপ্লব সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর থেকে জেলা ছাত্রলীগের আরেক নেতাসহ কয়েকজন রাতেই থানায় তদবির করতে থাকেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার তাদের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।