ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাসপোর্ট করতে এসে রোহিঙ্গা নারী পুলিশের জালে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 23 November 2025, 37 বার পড়া হয়েছে,

শাহাদাত হোসেন সোহেল,ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে নিজের নাম পরিচয় ও ঠিকানা গোপন রেখে মিথ্যা তথ্য দিয়ে পাসপোর্ট করতে এসে অবশেষে পুলিশের জালে আটকা পড়েছেন এক রোহিঙ্গা নারী। রবিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে তাকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে কর্তৃপক্ষ।

পাসপোর্ট অফিস সূত্রে খবর নিয়ে জানা যায়, সুফিয়া আক্তার নামের এক নারী পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করার জন্য সাধারণ প্রক্রিয়ায় এসে সবার মতো করে সিরিয়াল নেন। কিন্তু ঐ নারীর সাথে নির্ভরযোগ্য কোনো অভিভাবক না থাকায় তার পাসপোর্ট করার বিষয়টি নিয়ে প্রথম থেকেই কর্তৃপক্ষের কাছে সন্দেহজনক হয়ে ওঠে। পরে তাকে ডেকে পাসপোর্ট অফিসের দায়িত্বরত ডিডি মনিরুজ্জামানের কক্ষে এনে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে দেখা যায়, তার হাতে থাকা জন্মসনদ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ও চেয়ারম্যানের সার্টিফিকেট ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল কালিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সত্যায়িত, কিন্তু তার কথাবার্তায় বেশ অসংগতি ধরা পড়ে। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষের কাছে তার বক্তব্য ও আচরণও বেশ সন্দেহজনক মনে হয়। পরে তাকে প্রাথমিকভাবে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

এ বিষয়ে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মনিরুজ্জামান জানান, সুফিয়া আক্তার পিতা কালন মিয়া এমন নাম নিয়ে এক তরুণী আমাদের এখানে পাসপোর্ট করতে আসে। কিন্তু প্রথম থেকেই ঐ তরুণীর সাথে কোনো অভিভাবক ছিলো না, বিষয়টি আমাদের কাছে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় আমরা তাকে তার বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে আসতে বলি। পরে তার কথাবার্তা আমাদের কাছে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তার কাছে বিস্তারিত জানতে চাই।

ঐ অবস্থায় সেখানে একজন মিডিয়াকর্মীর উপস্হিতিতে তাকে তার বিস্তারিত পরিচয় জিজ্ঞাসা করি। কিন্তু সে তার গ্রামের ঠিকানাটাও পরিষ্কারভাবে আমাদের কাছে বলতে পারেনি। পরে এক পর্যায়ে জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে নেয় যে, সে আজ রবিবার সকালে কক্সবাজারের রামু উপজেলার একটি রোহিঙ্গা আশ্রয় প্রকল্প থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসেছে। তিনি আরও জানান, তাকে স্থানীয় এক ব্যক্তি পাসপোর্ট করাতে এখানে নিয়ে আসে এবং সরাইল উপজেলার কালিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সত্যায়িত কপি এখানে উপস্থাপন করে।কাগজপত্র বৈধ মনে হলেও তার আচরণে অসংলগ্ন ও কথাবার্তায় অসামঞ্জস্য ধরা পড়ায় বিষয়টি নিয়ে আরও বিষদ তদন্তের জন্য তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে পুরো পাসপোর্ট অফিসে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এবং এর পাশাপাশি কিভাবে একজন রোহিঙ্গা নারী বৈধ কাগজপত্র সংগ্রহ করলো এবং কারা তাকে এই বিষয়ে সহযোগিতা করলো সে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে তিনি জানান।