২১০ ধরনের চা বানান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশিক, মাসে আয় লক্ষাধিক টাকা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 16 October 2021, 530 বার পড়া হয়েছে,
জনতার খবর : গাভীর দুধ, মিল্ক পাউডার, ক্যাডবেরি চকলেট, স্ট্রবেরি, কাজুবাদাম, হরলিক্স, মাল্টোভা, আলুবোখারা, নাগা মরিচ, কাঁচামরিচ, মেথি, রসুন, তেঁতুল, লেবু, এলাচ ও দারুচিনিসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশিক ২১০ ধরনের নানান রঙের চা তৈরি করে তাক লাগিয়েছেন পিপাসুদের। প্রতিদিন গড়ে অন্তত ৫০০/৬০০ কাপ চা বিক্রি করেন।

চা বিক্রি করে আশিকের মাসিক আয় এক লাখ টাকার উপরে। কুমিল্লা সিলেট মহাসড়ক জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর বাজারে তার দোকান। মহাসড়কে চলাচলরত যাএীসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসেন আশিকের চা খেতে।

সিলেটকে চায়ের দেশ বলা হলেও, চায়ে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশিকুর রহমান আশিক। এক চা-পাতা দিয়ে ২১০ ধরনের চা বানাতে পারেন এই তরুণ। শ্রীমঙ্গলের সাতরঙা চায়ের সুনামকে ছাপিয়ে আশিকের চকলেট কাজুবাদাম চা, স্ট্রবেরী কাজুবাদাম চা আর মালাই চায়ের মতো হরেক স্বাদ ও গন্ধের চায়ের সুখ্যাতি এখন সর্বত্র।
প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষজন আসেন আশিকের তৈরি চা খেতে। আর এই চা বিক্রি করেই মাসে প্রায় এক লক্ষ টাকা আয় করছেন আশিক। উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর গ্রামের হাবলিপাড়া এলাকার মৃত আলী হায়দার মিয়ার ছেলে আশিক ৭ ভাই-বোনের মধ্যে চতুর্থ। ২০০৩ সালে বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরেন আশিক। অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় পড়াশোনাকে ইতি জানাতে হয় তাকে।আশিক জানান, ২০০৬ সালে বাড়ির পার্শ্ববর্তী শাহবাজপুর বাসস্ট্যান্ডে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান দেন তিনি। আগে দোকানে শুধু সাধারণ রং চা ও দুধ চা বিক্রি হতো। তবে বিভিন্ন দেশের হরেক স্বাদের চায়ের প্রতি আগ্রহ ছিল তার।

সেই আগ্রহ থেকে এখন তিনি ২১০ ধরনের চা তৈরি করছেন। গত ১ বছর ধরে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত ও ইরানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রচলিত বিভিন্ন স্বাদের চা তৈরি করছেন বলে জানান আশিক। সঙ্গে তার ছোট ভাই মাসুদ রহমানও চা তৈরি করেন। দুই ভাইয়ের তৈরি চায়ের মাধ্যমে তাদের এলাকার সুনামও ছড়িয়ে গেছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।

আশিকের দোকানে এখন সবচেয়ে বেশি চলছে মালাই চা, শাহী কাজুবাদাম চা ও চকলেট কাজুবাদাম চা এবং লেমন ও মাসালা চা। এছাড়া ব্যাচেলর রং চা-ও তরুণদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে। ধরনভেদে এক কাপ চায়ের দাম ১০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা পর্যন্ত। প্রতিদিন গড়ে ৫০০-৬০০ কাপ চা বিক্রি হয় আশিকের দোকানে। সব খরচ বাদ দিয়ে দৈনিক ৪-৫ হাজার টাকা আয় হয় তার।
চা খেতে আসা হবিগঞ্জের শিমুল মিয়া বলেন, ‘চাকরির সুবাদে সরাইলে আছি। প্রায় সময় আশিকের দোকানে আসি চা খেতে। তিনি খুব যত্ন করে চা বানান। তার চায়ের স্বাদ অন্য কোনো দোকানের চায়ে নেই। আমার কাছে মালাই ও লেমন চা বেশি ভালো লাগে’।
আরেক তরুণ ইমতিয়াজ জহির জানান, শাহবাজপুর এলাকার এক বাসিন্দা তাকে আশিকের চায়ের দোকানে নিয়ে এসেছিলেন। চা ভালো লাগায় এখন নিয়মিত বন্ধুদের নিয়ে আসেন আশিকের দোকানে। একেক দিন একের স্বাদের চা খান বলে জানান তিনি।
শাহবাজপুর বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন,আশিকের চায়ের টানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ এখন শাহবাজপুরে আসে। এতে করে এলাকার সুনাম ছড়াচ্ছে।
শাহবাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজীব আহমেদ বলেন, ‘আশিক তার নিজস্ব চিন্তা ও মেধার সমন্বয় ঘটিয়ে ২১০ ধরনের চা তৈরি করছে। তার মাধ্যমে শাহবাজপুর ইউনিয়নের নাম দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়েছে। এটি আমাদের জন্য আনন্দের এবং গর্বের।
(সূূূত্র আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া)