ব্রাহ্মণবাড়িয়া আমার অহংকার -এস এম শাহনূর

সাহিত্য, 23 January 2022, 382 বার পড়া হয়েছে,

যত দূরে যাই মন পড়ে থাকে আঁকাবাঁকা তিতাসের তীরে
যত কাছে যাই নিজেকে খুঁজে পাই বুড়িনদীর পাড়ে।
এখানে কেটেছে আমার দূরন্ত মধুময় শৈশব
অদের খালে এক পায়ে বসে থাকে কানাবক।
মাছরাঙা ধরে মাছ,ঘোলাজলে ডুব দেয় পানকৌড়ি
এখানে জন্মেছি আমি,গড়েছি শান্তিনিবাস ঘর বাড়ি।
এখানে জন্মেছে ঈসাখান,মনমোহন,ওস্তাদ আলাউদ্দিন কত নাম;
মাহমুদ শাহ,গেছুদারাজ,শায়খুল বাঙাল,পীর খালেক ঘুমিয়ে অবিরাম।
সুপ্রাচীন কাল থেকে অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির তীর্থ ভূমি
ব্রাহ্মণবাড়িয়াজেলা উপমহাদেশের এক অনন্য সাংস্কৃতিক রাজধানী।
সেদিনের শান্তির জনপদে কেন অগ্নুৎপাত ঘৃণার বৃষ্টি ঝরে,
তবে কি ক্ষুদিরাম,উল্লাস কর দত্তের চেতনা গিয়েছে মোদের মরে?
আমার জেলার গ্যাস বিদ্যুতে প্রগতির যান তুফান বেগে চলে
নৌ বন্দর,ব্যস্ততম স্থলবন্দরের বৈদেশিক অর্জন সেই কথাই বলে।
বাউনবাইরার মানুষের আতিথেয়তার নেই কোন জুড়ি
দেখতে হলে বন্ধু সময় করে একদিন এসো আমার বাড়ি।
তবে কখনো সংঘর্ষের জনপদ হিসাবে হচ্ছে শিরোনাম
পান থেকে চুনখসা নিয়ে ঘটে তর্কবিতর্ক-কুরুক্ষেত্র!
লজ্জায় মুখ ঢাকি,ক্ষয়েক্ষয়ে যায় জ্ঞানী গুণিদের দাম।
স্বচ্ছ আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে যখন নিজেকে বলি কী প্রয়োজন?
ভেতরের আমি বলে উঠে ঘটাতে মানসিক ও মানবিক উন্নয়ন।
বিশ্বসংগীতের পাদপীঠে কেন বাজেনা ভৈরবী মিলনের বাঁশি?
কেন ফোটেনা ঘাঘুটিয়া পদ্মবিলের মত শিষ্টাচার,সততার ফুল অহর্নিশি!
কারণ,আলাউদ্দিন রাগ,মলয়া কেউ শুনেনা; দেখেনা বিপিন পালের পুতুল নৃত্য শৈলী
পড়েনা অদ্বৈত,আঃ কাদির,কবির চৌধুরী,আল মাহমুদ রচনাবলী।
আবদুর রসুল,ধীরেন্দ্রনাথ,কুদ্দুস মাখন,সিরাজুল হকের রাজনৈতিক মতাদর্শ
জানতে চায়না তরুণ প্রজন্ম নিজের মাঝে খোঁজে না সেই আদর্শ।
আমার আছে হাজার বছরের শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি গৌরবের ইতিহাস
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেন গালি হবে অতি উৎসাহী কেউ করছো পরিহাস?
চাঁদ সওদাগরের সপ্তডিঙা,কালিদহ সায়র থেকে;
অস্ট্রো-মঙ্গোলিয়ান,কোচ হাজং চাষাবাদে;
কৈলাগড়,শাহবাজ খানের নৌ বহর থেকে খুঁজে নিও আমার ইতিহাস এই উর্বর জনপদে।