সৌদি আরব প্রবাসী ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের ঝুনারচরের চাঁন মিয়ার ছেলে উজ্জ্বল মিয়ার গলা কাটা লাশ দেখে স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠে চারপাশ। মঙ্গলবার রাত ১০টায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার লাশ পৌঁছলে স্বজনরা চিৎকারে ফেটে পড়েন।
রাত ৩টার দিকে নিজবাড়িতে পৌঁছায় উজ্জ্বলের লাশ। বুধবার সকালে তার গ্রামের বাড়ি ঝুনারচরে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
সৌদিতে ৮ মাস যাবত কর্মরত ছিলেন উজ্জ্বল। পবিত্র ঈদুল আজহার ১৫ দিন আগে ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে তাকে খুন করে স্ত্রীর প্রেমিক শাহিন।
তিন বছর আগে উজ্জ্বল বিয়ে করেন কুমিল্লার হোমনা উপজেলার মিঠাভাঙ্গা গ্রামের সফিক মিয়ার মেয়ে সামিয়াকে। এক সময় দেড় বছরের মেয়েসন্তান ও স্ত্রীকে বাড়িতে রেখে বিদেশে পাড়ি জমান উজ্জ্বল। দুঃসম্পর্কের ভাগিনা শাহিনকে সৌদি নিয়ে যান উজ্জ্বল। কিন্তু স্ত্রী সামিয়ার সঙ্গে ভাগিনা শাহিনের যে পরকীয়া সম্পর্ক আছে তা জানতেন না উজ্জ্বল।
শাহিন সৌদি গিয়েই উজ্জ্বলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। নিজ হাতে গলা কেটে উজ্জ্বলকে হত্যার কথা সৌদি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে শাহিন। সামিয়াকে বিয়ে করতেই উজ্জ্বলকে হত্যার কথা জানায় সে। এজন্য সামিয়া তাকে প্ররোচিত করেছে বলেও জানায়।
শাহিন কুমিল্লার তিতাস উপজেলার বাতাকান্দি গ্রামের মুর্শিদ মিয়ার ছেলে। তার বেড়ে উঠা নানার বাড়ি ঝুনারচরে। নানার বাড়িতে থাকার সুবাদে বন্ধুসুলভ চলাফেরা হয় উজ্জ্বলের সঙ্গে। পরে উজ্জ্বলের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে তাকে খুনের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পাড়ি জমায় সৌদি আরবে।
এলাকাবাসী ও উজ্জ্বলের পিতামাতার দাবি, খুনি শাহিনসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত তার স্ত্রীকে যেন বিচারের আওতায় আনা হয়।
স্থানীয় সলিমাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল মতিন বলেন, সৌদি আরবে উজ্জ্বলের সঙ্গে একই রুমে থাকত শাহিন। শাহিনের সঙ্গে উজ্জ্বলের স্ত্রীর পরকীয়া ছিল। শাহিনের মোবাইলে এ সংক্রান্ত ছবি দেখে ফেলায় দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। এর জের ধরে উজ্জ্বলকে হত্যা করে শাহিন।