সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা ও দায়রা জজ বেগম শারমিন নিগার মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। রায়ে ফাঁসির আদেশের পাশাপাশি তাকে আরো ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত রাসেল মিয়া জেলার কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে রাসেল মিয়া পলাতক রয়েছেন।
আদালতে দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদন ও নথিপত্র ঘেঁটে জানা গেছে, ২০১৩ সালে কুটি ইউনিয়নের রামপুরের কুদ্দুস মিয়ার ছোট মেয়ে সুমা আক্তার-(২৫) এর সাথে রাসেল মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় রাসেল মিয়াকে একটি অটোরিকসাসহ প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার মালামাল ও এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন দেয়া হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। নথিপত্রে বলা হয়, রাসেল মিয়া বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় সুমাকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে চাপ দিতো। ঘটনার ৭/৮ মাস আগে রাসেল মিয়া ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য সুমা আক্তারকে মারধোর করলে সুমা তার বাবার বাড়িতে চলে যায়। ২০১৫ সালের ৩১ মে সুমা আক্তার রাসেলকে তালাক দেয়। এরপর থেকেই সুমার প্রতি ক্ষুব্দ ছিলো রাসেল। ২০১৫ সালের ৪ অক্টোবর সন্ধ্যার পর সুমা আক্তার খাওয়া-দাওয়া শেষে বাবার বাড়ির এক ঘর থেকে আরেক ঘরে যাওয়ার সময় পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা রাসেল মিয়া সুমাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমাকে মৃত ঘোষনা করেন। তবে মারা যাওয়ার আগে সুমা আক্তার হামলাকারী রাসেলের নাম বলে যায়।
ঘটনার পরদিন সুমা আক্তারের বাবা কুদ্দুস মিয়া বাদি হয়ে কসবা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বেলাল হোসেন তদন্ত শেষে ডিসেম্বর মাসে রাসেলকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সুমা তালাক দেয়া ক্ষুব্দ রাসেল মিয়া তাকে হত্যা করেন। সকল সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে সোমবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ শারমিন নিগার রাসেলকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তবে হত্যাকাণ্ডের থেকে রাসেল পলাতক থাকায় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছাড়া আসামীপক্ষের নিয়োজিত কোন আইনজীবী উপস্থিত ছিলোনা।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের পুলিশ পরিদর্শক কাজী দিদারুল আলমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।