ঢাকা মেট্রোপলিটন আদালত তাকে এই সাজা প্রদান করেন। সোনিয়া বর্তমানে কানাডায় রয়েছেন। ইতোপূর্বে অন্য আরেকটি মামলায় তার এক বছরের সাজা হয়। এই মামলায় জামিনে এসেই কানাডা পাড়ি জমান তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হান্নান রতনের সাবেক স্ত্রী সোনিয়া জেলা আওয়ামী লীগের আরেক নেতার সঙ্গে পরকীয়া জড়িয়ে পড়েন । এ ঘটনার জেরে রতনের সাথে ছাড়াছাড়ি হলে ২০২০ সালের ২৪ মে ঐ নেতাকে বিয়ে করেন তিনি। এই বিয়ের কিছুদিন পর তার দ্বিতীয় স্বামীমারা যান।
সোনিয়ার সাজার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন আদালতের আইনজীবী আরফানুল হক জানান, ২০১৯ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের রবিউল আউয়ালকে কানাডা নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেন ফারজানা আহম্মেদ সোনিয়া। এজন্য ২০লাখ টাকা দাবি করেন। এরমধ্যে ১০লাখ টাকা অগ্রিম এবং বাকি টাকা ভিসা হওয়ার পর দেয়ার কথা বলেন। তার এই কথায় রবিউল আউয়াল রাজি হয়। চুক্তি অনুযায়ী সোনিয়াকে প্রথম ধাপে সাড়ে ৫ লাখ এবং ২য় ধাপে সাড়ে ৪ লাখ টাকা প্রদান করেন রবিউল। এনিয়ে ৩০০ টাকা মুল্যের ননজুডিশিয়াল স্টাম্পে চুক্তি হয় তাদের। এর কিছু দিন পর সোনিয়া কানাডা চলে যান।
সেখানে যাওয়ার ২/৩ মাস পর রবিউলকে জানান, বাংলাদেশ থেকে ভিসা হবে না, ভারতে গিয়ে ভিসা প্রসেস করতে হবে। তার কথা অনুযায়ী রবিউল ভারতের কোলকাতায় গিয়ে এক ব্যক্তির সাথে দেখা করে আরও ৫০হাজার টাকা প্রদান করেন। এরমধ্যে বিভিন্ন টালবাহানা করে ভারতের সেই লোক যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। সোনিয়াও নানান ছলচাতুরীর আশ্রয় নেন। কয়েকদিন পর রবিউল সোনিয়াকে ভিসার কথা জিজ্ঞেস করলে সোনিয়া তার কাছ থেকে টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার এবং হুমকি প্রদান করেন।
এ ঘটনায় রবিউল আউয়াল ঢাকা মেট্রোপলিটন আদালতে মামলা দায়ের করেন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক বেগম ইশরাত জাহান সোনিয়াকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের জেল প্রদান করেন।
আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হান্নান রতনের সাবেক স্ত্রী, ৩ সন্তানের জননী সোনিয়া জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এর সাথে পরকিয়া সম্পর্কে জড়িয়ে আলোচনায় আসেন। এ ঘটনায় স্বামী আব্দুল হান্নান রতনকে মারধোর করেন সোনিয়া। এই অভিযোগে মামলা হলে গ্রেপ্তার হন সোনিয়া। জেল থেকে বের হয়ে পরকিয়া প্রেমিকের সহায়তায় আব্দুল হান্নান রতনকে হত্যার চেষ্টা চালান তিনি।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২০২০ সালে সোনিয়া ও তার পরকিয়া প্রেমিককে এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে ঢাকা মহানগর চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এছাড়া পাঁচশ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ডের আদেশ প্রদান করা হয়। এরপর সোনিয়া কানাডা থেকে দেশে ফিরলে বিমান বন্দর থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে তাকে। বর্তমানে এই মামলায় সোনিয়া জামিন নিয়ে কানাডায় পলাতক। তার দ্বিতীয় স্বামীও গতবছর মারা যান।