ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে বিষধর রাসেল ভাইপারের কামড়ে সোয়াঈদ মিয়া (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শনিবার বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
নিহত সোয়াঈদ উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের নতুন পাড়ার মো. বিল্লাল মিয়ার ছেলে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সোয়াঈদ মিয়া সিলেটে ফার্নিচারের ব্যবসা করেন। ঈদ উদযাপন করতে গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুরে আসে। গত শুক্রবার (১৫ জুলাই) রাতে বন্ধুদের সাথে বাড়ির পাশে খালের পানিতে মাছ ধরতে যায়। মাছ ধরতে গিয়ে রাত ১টার দিকে সে তার বন্ধুদের জানায় ডান পায়ে গোখড়া সাপে কামড় দিয়েছে। তখন বন্ধুরা আক্রান্ত স্থানে রশি দিয়ে বাধ দেয়। স্থানীয় লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। তার পরিবারের লোকজন ভোর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরার্মশ দেয়। কিন্তু সোয়াঈদের শরীরে বিষ ছড়িয়ে পাড়ায় কুমিল্লায় আর নেওয়া হয়নি। শনিবার সকাল থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত কয়েকজন স্থানীয় সাপুড়ে দিয়ে গ্রাম্য চিকিৎসা করানো হয়। পরে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাইফুল ইসলাম ও ডা. জীবন চন্দ্রও দাসের একটি মেডিকেল টিম বিভিন্ন পরীক্ষার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ডা. জীবন চন্দ্র দাস বলেন, যখন সাপে কামড় দিয়েছে সাথে সাথেই নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে তাকে হয়তো বাঁচানো যেত। কিন্তু তারা স্থানীয় সাপুড়ে দিয়ে ঝাড়ফুঁক দিয়ে রোগীকে চিকিৎসা করিয়েছে। নিহতের মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে দেখে মনে হচ্ছে বিষাক্ত রাসেল ভাইপার কামড়িয়েছে।
নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অভিজিৎ রায় বলেন, সাপে কামড়ে যুবকের মৃত্যুর খবরটি জানতে পেরেছি। এরই মধ্যে ফেসবুকে গুজব ছড়িয়েছে নাসিরনগর হাসপাতালে যুবকে নিয়ে আসার চিকিৎসা না করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়। আরো বলেন, আমি সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, নাসিরনগর সাপে কামড়ের ভ্যাকসিন আছে। যুবকটি মৃত্যুর পূর্বে চিকিৎসার জন্য নাসিরনগর হাসপাতালে তাকে আনা হয়নি।