ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা গ্রামের মো. আজিজুল হক রবিন (২২) নামে যুবক নিখোঁজ হননি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। নরসিংদীর জেলার রায়পুর উপজেলায় পানির নিচে খুঁটিতে বাধা অবস্থায় যে লাশটি পাওয়া যায় সেটিই রবিনের।
রবিনের স্ত্রী সুইটি আক্তার এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে নিজেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গত শনিবার (২২ অক্টোবর) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আফরিন আহমেদ হ্যাপির কাছে ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে নিজের স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনার কথা জানান সুইটি।
এর মধ্য দিয়ে প্রায় পাঁচ মাস পর রবিন ‘নিখোঁজ’ রহস্যের উন্মোচন হলো। স্ত্রী সুইটির রহস্যজনক আচরণে সন্দেহ হলে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর তিনি ঘটনা খুলে বলেন। এরপর তিনি আদালতে স্বীকারোক্তি দিতে রাজি হন।
আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, দিদার নামে এক স্বজনের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক স্বামী সহ্য করতে না পারার কারণে সুইটি এ হত্যাকান্ড ঘটান। হত্যাকান্ডের সময় দিদারসহ বাদল নামে এক ভাড়াটে খুনি উপস্থিত ছিলেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ি এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়। এরপর লাশ গুম করার জন্য শরীরে ইট বেঁধে নদীর মাঝখানের একটি খুঁটি পুতে বেধে দেওয়া হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা আনোয়ার আরো বলেন, সুইটি বিভিন্ন আচরণ আমাদের সন্দেহ হতে থাকে। তার স্বামী রবিন বিদেশ ভালোভাবে পৌঁছে গেছে বলেও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। অন্যদিকে রবিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি আশুগঞ্জ এলাকাতেই ব্যবহার হচ্ছে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়। আরো কিছু সন্দেহ থেকে রবিনের স্ত্রী সুইটিকে দু’দিন আগে গ্রেপ্তার করা হলে হত্যাকান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। লাশ ফেলে রাখার স্থানও দেখায় সুইটি। পরে জানা যায়, নরসিংদীর রায়পুরা এলাকার ওই স্থান থেকে খুঁটিতে বাধা লাশ উদ্ধার করে মাঝেরচর নৌ পুলিশ। লাশের পরনে থাকা কাপড় চোপড়ের মাধ্যমে রবিনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়। এ ঘটনায় রবিনের বাবা বাদী হয়ে আশুগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
রবিনের বাবা মো. আলমগীর খান সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘আমার ছেলের লাশটাও দেখতে পারিনি। এমন নিষ্ঠুর হত্যাকান্ডের সঙ্গে যারা যারা জড়িত তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাচ্ছি। -(সরোদ)