
ঝিলমিলের দাদা মারা যায় ২০০২ সালে। নানা মারা যায় ২০০৬ সালে। তার জন্মের আগে তো বটেই তার বাবা-মার বিয়ের আগেই তার দাদা ও নানা মৃত্যুবরণ করেন। কন্যার দাদা নানার অভাব কিছুটা হলেও পূরণ করার জন্য সুযোগ পেলেই আমি একটু বয়স্ক/ মুরুব্বী যে কাউকেই দাদা বা নানা ডাকতে উৎসাহিত করি তাকে।
গত দেড় বছরের অধিক সময় ধরে করোনাভাইরাস সংক্রমণে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের উল্লেখযোগ্য অংশ বয়সে প্রবীণ। বিশ্বভ্রমণে থাকা প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস এখন মরণ কামড় দিয়েছে বাংলাদেশের বুকে। দিনদিন পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হচ্ছে। নিরাপদ নয় নিজ শহর ব্রাহ্মণবাড়িয়াও।
চারিদিকে পরিচিত বা অপরিচিত এত মানুষের মৃত্যু দেখেও আমরা এখনো সতর্ক নই। আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম সব ঠিকঠাক ভাবেই করছি। থেমে নেই বিয়ে, জন্মদিনের মতো সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান।
আড্ডা, ঘোরাঘুরি, খেলাধুলা চলছেতো চলছেই। অত্যাবশ্যক নয় এমন ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও প্রচুর জনসমাগম। হাট-বাজার, চায়ের দোকান, রাস্তাঘাট, যানবাহনে মানুষের ভিড় দেখে বোঝার উপায় নেই দেশে মহামারী চলছে; চলছে লকডাউন।
স্বাস্থ্যবিধি মানতে সকলের এত উদাসীনতা দেখে আমি ভয় পাচ্ছি আমাদের শিশুদের জন্য পৃথিবীটা হয়তো খুব দ্রুতই দাদা-নানা শুন্য হয়ে যাবে। দাদী, নানী, বাবা, চাচা, মা, খালা, ভাই বা বন্ধু যারা মারা যাচ্ছে তাদের সংখ্যাটাও নিতান্তই কম নয়।
মৃত্যুর মিছিলের সংখ্যাটা ক্রমশ দীর্ঘতর হচ্ছে। এর পরবর্তী সংখ্যাটা হয়তো আপনি বা আমি। অথবা আমাদের খুব নিকট কোন আত্মীয়। এরকম পরিস্থিতিতে পড়তে না চাইলে এখনো সময় আছে সকলে সতর্ক হোন। সাবধান থাকুন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।
পাশাপাশি নিজের সাধ্য অনুযায়ী লকডাউন এর কারণে অর্থনৈতিক ভাবে বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ান। নিজে বাঁচুন অন্যদেরকেও বাঁচতে দিন।
করোনাভাইরাস মুক্ত একটি সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশায়….
মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ
২৬ জুলাই ২০২১ খ্রি.
ব্রাহ্মণবাড়িয়া।