ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ধর্ষণের অপবাদ দিয়ে এক রিকশা চালকে ফাঁসাতে নিজেই পুলিশের কাছে ফেঁসে গেলেন এক তরুণী। বুধবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। ওই তরুণীর নাম ফাতেমা (২০)। সে জেলার নাসিরনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের ফুলকাকান্দির ইয়াকুব আলীর মেয়ে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম জানান, ফাতেমা কুমিল্লা শহরে মানুষের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সে ট্রেনে কুমিল্লা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে আসেন। সেখান থেকে সে একটি রিকশায় উঠেন বাসস্ট্যান্ডে উদ্দেশ্যে যেতে৷ সেই রিকশায় চালক ছিলেন রাজন (২৮)। বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে ফাতেমা নাসিরনগরে যাওয়ার কোন যানবাহন পাননি।
ওসি আরও জানান, ফলে ফাতেমা রিকশা চালক রাজনকে রাতের জন্য আশ্রয় দিতে বলেন৷ ফাতেমাকে অসহায় ভেবে রিকশা চালক রাজন প্রথমে তার শ্বাশুড়ি কাছে নিয়ে যান আশ্রয় দিতে। সেখানে গিয়ে রাজন তার শ্বাশুড়িকে না পেয়ে নিজ বাড়িতে নিয়ে এসে স্ত্রীকে সব খোলে বলেন। কিন্তু তার স্ত্রী ফাতেমাকে বাড়িতে রাত যাপন করতে দিতে রাজি হননি৷ তবে ফাতেমাকে রাতের খাবার খেতে দেন রাজনের স্ত্রী৷ খাবারের পর রাতে রাজন ও তার স্ত্রী দুজনে গিয়ে ফাতেমাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে দিয়ে আসেন। স্টেশনে দিয়ে আসার সময় ফাতেমা রিকশা চালক রাজন ও তার স্ত্রীকে হুমকি দেন। পরে ভোররাতে ফাতেমা রেলওয়ে স্টেশনে থানার টহল পুলিশকে পেয়ে তাকে রিকশা চালক রাজন করেছে বলে ধর্ষণের অভিযোগ করেন। পুলিশ তাকে সদর মডেল থানায় নিয়ে যান। ভোররাতেই পুলিশ রিকশা চালক রাজনকে শহরের কাজিপাড়ার বাসা থেকে থানায় নিয়ে আসে। সেখানে বুধবার সকাল থেকে রাজনের স্ত্রীর উপস্থিতিতে উভয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায়৷ ফাতেমা মিথ্যা গল্প বানিয়ে রিকশা চালক রাজনকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছিল।
তিনি আরও জানান, ফাতেমার বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট থানার মাধ্যমে খোঁজ নিয়েছি৷ তার ইতিমধ্যে ৪টি বিয়ে হয়েছে। এক স্বামীর সাথেও তার সংসার টেকেনি। তার মা সহ অন্যান্য সদস্যরা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। ফাতেমা নিজেও অনৈতিক কাজের সাথেও জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ফাতেমাকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে৷ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।