সেই বিচারক কামরুন্নাহারকে প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন জারি

সারাদেশ, 14 November 2021, 380 বার পড়া হয়েছে,

নিজস্ব প্রতিবেদক : ধর্ষণের ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলে পুলিশকে মামলা না নেওয়ার পর্যবেক্ষণ দেওয়া ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহারকে প্রত্যাহার করে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে। আজ রোববার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক (জেলা জজ) মোছা. কামরুন্নাহারকে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করা হলো। গত বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) একটি ধর্ষণ মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচজনকে খালাস দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহারের আদালত।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘মামলার দুই ভিকটিম আগে থেকেই সেক্সুয়াল কাজে অভ্যস্ত। তারা স্বেচ্ছায় হোটেলে গেছেন। সেখানে গিয়ে সুইমিং করেছেন। ঘটনার ৩৮ দিন পর তারা বললেন, “আমরা ধর্ষণের শিকার হয়েছি।” অহেতুক তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রভাবিত হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছেন। এতে আদালতের ৯৪ কার্যদিবস নষ্ট হয়েছে। এরপর থেকে পুলিশকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছি। এ ছাড়া এরপর থেকে ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর যদি কেউ মামলা করতে যায় তা না নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।

বিচারকের এ বক্তব্য বিতর্কের জন্ম দেয়। গতকাল শনিবার এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘বিচারকের বক্তব্য বেআইনি এবং অসাংবিধানিক। এ কারণে প্রধান বিচারপতির কাছে বিচারক হিসেবে তার দায়িত্ব পালন নিয়ে যেন ব্যবস্থা নেয়া হয় সেজন্য একটা চিঠি লিখছি।

রোববার সকালে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার ও মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিচারক কামরুন্নাহারের ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করতে সুপ্রিম কোর্ট থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে ওই বিচারককে আজ সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে আদালতে না বসার নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

পরে দুপুরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিচারিক কাজ থেকে তাকে যে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হচ্ছে, সেটাও মাননীয় প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দিলে আমরা একটা জিও করব।

তিনি আরও বলেন, ‘আইনে তার যা সুবিধা…তাকে শোকজ করা হবে। তিনি কেন বলেছেন তার ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। সেটা আইনিভাবে যে প্রক্রিয়া দেয়া আছে, সেটাই তার ব্যাপারেও প্রযোজ্য।

প্রধান বিচারপতি এই শোকজ পাঠাবেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এ শোকজ যখন আমাদের কাছে পাঠানো হবে। এটা আমরা তার কাছে পৌঁছে দেব।