বৃদ্ধকে হত্যা করে বাথরুমের টাঙ্কিতে ফেলে রাখলেন পরকিয়া প্রেমিকা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 25 January 2025, 12 বার পড়া হয়েছে,

মো. আজহার উদ্দিন,ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ইসমাইল মিয়া (৬৫) নামে এক বৃদ্ধকে খুন করে বাথরুমের পরিত্যক্ত টাঙ্কিতে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছে পরকিয়া প্রেমিকার বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর টানপাড়া গ্রামের এক পরিত্যক্ত বাথরুমের টাঙ্কি থেকে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে।

নিহত ইসমাইল মিয়া উপজেলার লামা শরীফপুর গ্রামের মৃত উজির আলীর ছেলে। সে ৬ সন্তানের জনক।

এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে পরকিয়া প্রেমিকা হোসেনপুর টানপাড়া গ্রামের শান্তা আক্তার (৩৫) ও তার স্বামী সুমন মিয়াকে (৪০) আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে স্থানীয় লোকজন।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, গত বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে ইসমাইল মিয়া নিঁখোজ ছিলেন। তার পরিবারের লোকজন তাকে খুঁজে না পেয়ে শুক্রবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়। এরই মধ্যে বিকেল আড়াইটার দিকে স্থানীয় লোকজন হোসেনপুর টানপাড়া গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ির বাথরুমের টাঙ্কির ভিতরে তার লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক পরকিয়া প্রেমিকা শান্তা বেগম জানায়, ইসমাইল মিয়ার সাথে তার দীর্ঘদিন ধরে পরকিয়া প্রেম চলছিল। ইসমাইল মিয়া বিভিন্ন ছলে প্রায়ই তার সাথে দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হতেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটায় তার রাজমিস্ত্রি স্বামী কাজের সুবাধে বাড়িতে না থাকায় ইসমাইল তার ঘরে প্রবেশ করে তার সাথে দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। তিনি যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট খেয়ে যাওয়ায় শান্তার খুব কষ্ট হচ্ছিল। তাই শান্তা ইসমাইলকে ঘর থেকে বের করে দিতে চেয়েছিল। এসময় ইসমাইল শান্তার অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া ১৪ বছরের মেয়ে কেয়াকে ঘুমের মধ্যে ঝাপটে ধরে। এতে শান্তা ক্ষিপ্ত হয়ে রাজমিস্ত্রির যন্ত্র কোটাবাড়ি দিয়ে ইসমাইলের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে শান্ত তার পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিঃশ্চিৎ করে। এরপর মেয়ের সহযোগিতায় লাশটি পার্শ্ববর্তী একটি পরিত্যক্ত বাড়ির বাথরুমের টাঙ্কিতে ফেলে দিয়ে আসেন। রাতে শান্তার স্বামী ঘরে ফিরেন। তবে মা মেয়ে স্বাভাবিক থাকেন। তবে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক সুমন মিয়া এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে জানান।

এদিকে নিহতের ছেলে সাদ্দাম হোসেন বলেন, সুমন ও তার স্ত্রীসহ অজ্ঞাত খুনিরা আর্থিক কোন কারণে তার পিতাকে খুন করেছে।

এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ বিল্লাল মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খুনের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত সন্ধেহে স্বামী-স্ত্রী দুজনকে আটক করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ ও তদন্তের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।