পরকীয়ার জের ধরে হত্যার শিকার হয় শারমীন ও সন্তানরা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 18 November 2024, 11 বার পড়া হয়েছে,
মোঃ নিয়ামুল ইসলাম আকঞ্জি,ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত মঙ্গলবার গৃহবধূ শারমীন আক্তার ও তার দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। সে সময় পুলিশ ধারণা করেন তারা বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। তবে শারমীনের পরিবারের দাবি, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। পরকীয়ার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
ঘটনার পর থেকে স্বামীসহ পরিবারের লোকজন পালিয়ে যাওয়ায় তাদের কাছে এ নিয়ে আরো বেশি সন্দেহ হচ্ছে। পরিবারটি জানায়, শারমীনের স্বামী পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িত। একইসঙ্গে নেশায় ডুবে থাকতেন। এসব বিষয় নিয়ে পরিবারে বিবাদ লেগেই থাকতো।
বিয়ের দুই বছরের মাথায় শারমীন চলে যান বাপের বাড়ি। গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে তাকে আবার স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হয়। তবে সুখ ধরা দেয়নি শারমীনের কপালে।
পুলিশ, পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় আট বছর আগে জেলার বিজয়নগর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের কদু মিয়ার মেয়ে শারমীনের সঙ্গে সদর উপজেলার ঘাটুরা গ্রামের সরকার বাড়ির মারাজ মিয়ার ছেলে আশরাফ আলীর বিয়ে হয়।
আশরাফ বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডের একজন কর্মচারী। নেশায় আসক্ত হওয়ায় আশরাফের সঙ্গে প্রায়ই শারমীনের ঝগড়া-বিবাদ হতো। সংসার চালানোর খরচ নিয়েও তাদের মধ্যে বিরোধ হতো প্রায়ই।
শারমীনের মা রেজিয়া বেগম জানান, শারমীন কিছুদিন পরই বেড়াতে আসবে বলেছিলো। কিন্তু কি কারণে হঠাৎ করে কীভাবে কি হয়েছে তা তিনি বলতে পারছেন না।
তিনি ঘটনাটি রহস্যজনক দাবি করে সত্য উদঘাটনের মাধ্যমে কেউ দায়ী হলে বিচারের দাবি করেন।
শারমীনের বাবা কদু মিয়ার অভিযোগ জানিয়ে বলেন, তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। পরিকল্পিতভাবেই স্বামী ও তার বাড়ির লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে। শারমীনকে হাসপাতালে দিয়ে তার স্বামী আশরাফ পালিয়ে যান বলেও তিনি অভিযোগ করেন। পাশাপাশি এটিও জানান যে বিয়ের দুই বছর পর্যন্ত তার মেয়ে স্বামীর ঘরে ভালোই ছিলো। এরপর থেকেই তাদের মধ্যে কলহ দেখা দেয়। আশরাফ পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়লে এ বিরোধ বেড়ে যায়।
শারমীনের ফুফাতো ভাই মো. নাদিমুল ইসলামও এ ঘটনার জন্য আশরাফকে দায়ী করেন। ভাইয়ের বৌয়ের সঙ্গে পরকীয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলে তিনি দাবি করেন। এ বিষয়ে তারা থানায় লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে জানান তিনি।
বোন জামাই মো. খসরু মিয়া জানান, বিয়ের দুই বছরের মাথায় স্বামীর সঙ্গে শারমীনের বিভিন্ন সমস্যা শুরু হয়। এরপর আশরাফের পরিবারের অনুরোধে গ্রামের লোকজনের মাধ্যমে আইনি প্রক্রিয়ায় শারমীনকে শ্বশুর বাড়িতে দেওয়া হয়। তবে পরকীয়া নিয়ে শারমীন ও আশরাফের বিরোধ দেখা দেয়। এরই জেরে তাদেরকে মেরে ফেলা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. তানভীর আহমেদ জানান, বৃহস্পতিবার ওই তিনজনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। তবে থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।