মাদক হবে চিৎপটাং’ ‘মোবাইল ফোনে নয়, আসুন মাঠে বসে খেলা দেখি’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 11 October 2024, 25 বার পড়া হয়েছে,
মোঃনিয়ামুল ইসলাম আকঞ্জি,ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ‘ক্রীড়াঙ্গনে জেগেছে প্রাণ, মাদক হবে চিৎপটাং’, ‘মোবাইল ফোনে নয়, আসুন মাঠে বসে খেলা দেখি’- এ দু’টি বার্তা নিয়মিত প্রচার করা হয় ফুটবল খেলাকে ঘিরে। এখানেই শেষ নয় মাঠের ফুটবলে আছে আরো বার্তা। এর মধ্যে রয়েছে সময়ানুবর্তিতা ও নিয়মানুবর্তিতা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সমাজ সংস্কারের মোট চারটি বার্তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। রাধানগর যুব সমাজ মাদক ও মোবাইল ফোন থেকে তরুণ সমাজকে দূরে রাখা এবং সময় ও নিয়মাবর্তিতার এ বার্তা বয়ে বেড়াচ্ছে।
এসব বার্তা ছড়িয়ে দিতে গত ৭ অক্টোবর আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি ডিগ্রী কলেজ মাঠে রাধানগর যুব সমাজের উদ্যোগে ফুটবল টুর্নামেন্টের শুরু হয়। রাধানগর গ্রামের খেলোয়াড়দের ভাগ করে গড়ে তোলা পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, তিতাস একাদশ। এ চারটি দল নক আউট পদ্ধতির টুর্নামেন্টে অংশ নেয়। শুক্রবার বিকেলে অনুষ্ঠিত ফাইনালে যমুনা দলকে টাইব্রেকারে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় পদ্মা।
ফাইনাল খেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক গাজালা পারভীন রুহি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক জয়নাল আবেদীন আব্দু, সদস্য সচিব খোরশেদ আলম ভূঁইয়া, পৌর বিএনপি’র আহবায়ক মো. সেলিম ভূঁইয়া, রাধানগর স্পোটিং ক্লাবের সাবেক সভাপতি শেখ মো. ইকবাল হোসেন, খেলা পরিচালনা কমিটির আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন।
সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল বাবু’র সঞ্চালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাহের খন্দকার, শিক্ষক মো. শাহ আলম, ব্যবসায়ি হাসিবুল হাসান, দীপক কুমার ঘোষ, শিপন হায়দার, মানিক মিয়া, আতিকুর রহমান, জসিম উদ্দিন, মশিউর রহমান বাবুল, আশারুজ্জামান ভূঁইয়া, আনোয়ার হোসেন, মো. লিটন প্রমুখ।
রাধানগর গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারের পট পরিবর্তনের পর সামাজিকভাবে একটা আতঙ্ক চলছিলো। প্রশাসনে ছিলো ঢিমেতাল। এ অবস্থায় বিশেষ যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার তাগিদে একাধিক বৈঠক করা হয়। এসব বৈঠকে ফুটবলের মাধ্যমে যুব সমাজকে মাঠে ফেরানোর তাগাদা দেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে আয়োজিত ফুটবল টুর্নামেন্টে মাদক ও মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকার বিষয়ে প্রতিদিন মাইকিং করা হয়।
মাঠের ধারাবিবরণীতেও চলে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা। প্রতিদিন খেলা একেবারেই নির্ধারিত সময়ে চালুর রীতি করা হয়। এছাড়া নিয়ম মানতে আগে থেকেই খেলোয়াড়সহ সংশ্লিষ্টদেরকে অঙ্গীকারবব্ধ করানো হয়।
টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটির আহবায়ক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘মাঠের এই খেলাকে কেন্দ্র করে আমাদের একাধিক সামাজিক বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য ছিলো। যুব সমাজকে খেলাধুলায় মনোযোগি করার পাশাপাশি মাদক ও মোবাইল ফোন থেকে দূরে রাখার বিষয়ে আমরা প্রচার করেছি। সকলের সহযোগিতায় সুন্দর একটি টুর্নামেন্ট সফর হওয়ায় কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
ইউএনও গাজালা পারভীন রুহি তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা ভার্চ্যুয়াল জগতের কথা বলে নিজেরাই ভার্চ্যুয়াল হয়ে যাচ্ছি। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে এ ধরণের খেলার উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। এক সময়ের জনপ্রিয় খেলা ফুটবলের ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।’ এ সময় তিনি ক্রীড়ামোদিদের দাবির মুখে শহীদ স্মৃতি ডিগ্রী কলেজ মাঠটিকে আরো বেশি খেলার উপযোগি করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।