জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব থেকে বিভিন্ন বিষয়ে উসকানিমূলক ও উগ্রবাদী কনটেন্টসহ বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর কনটেন্ট সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করবে বাংলাদেশ। সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।
এ বিষয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যামসুন্দর সিকদার বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে এক যুগ ধরে বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে প্রভূত উন্নতি সাধন করেছে। দেশে মােবাইলফোন এবং ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে। ক্রমান্বয়ে টু-জি, থ্রি-জি, ফোর-জি চালু হয়েছে। সামাজিক যােগাযোগমাধ্যমসমূহের ব্যবহার বেড়েছে। বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং সামাজিক যােগাযােগমাধ্যম ব্যবহারে ইতিবাচক সুবিধার পাশাপাশি এর অপব্যবহারও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব ওয়েবসাইট এবং সামাজিক যােগাযােগমাধ্যমে পর্নোগ্রাফি, সরকার ও রাষ্ট্রবিরােধী, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক কিংবা ধর্মীয় বিষয়ে উসকানিমূলক ও উগ্রবাদী কনটেন্ট প্রচার প্রতিদিন আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া শিশু ও কিশােররা এসব সামাজিক যোগাযােগমাধ্যম ব্যবহার এবং অনলাইনে গেমস খেলার কারণে তাদের পড়াশােনায় ব্যাঘাত ঘটার পাশাপাশি স্বাভাবিক বিকাশও ব্যাহত হচ্ছে ।
এ সময় বিটিআরসির বিভিন্ন কার্যকলাপ তুলে ধরে শ্যামসুন্দর সিকদার বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গােয়েন্দা সংস্থা ও বিভিন্ন সরকারি সংস্থা প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, সরকার ও রাষ্ট্রবিরােধী কর্মকাণ্ড, ধর্মীয়, পর্নোগ্রাফি এবং রাজনৈতিক উসকানিমূলক তথ্য সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যমসমূহের বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট, পেজ, চ্যানেল, লিংক, ইমেজ, অডিও, ভিডিও কনটেন্ট অপসারণের জন্য বিটিআরসির কাছে অনুরােধ জানায়। এই অনুরােধের পরিপ্রেক্ষিতে বিটিআরসি সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ডােমেইন এবং সামাজিক যােগাযোগ মাধ্যমের অবমাননাকর পােস্ট এবং আপত্তিকর কনটেন্ট বন্ধ করার জন্য সামাজিক যােগাযােগমাধ্যম প্রতিষ্ঠানসমূহকে কনটেন্ট রিপাের্টিং সিস্টেমের মাধ্যমে অনলাইনে অনুরোধ জানায়। এরপর সামাজিক যোগাযােগমাধ্যম কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড গাইডলাইন অনুযায়ী বিটিআরসি থেকে প্রাপ্ত অভিযােগগুলো বিশ্লেষণ করে ওই কনটেন্টগুলো অপসারণ/ব্লক/ অ্যাক্যাউন্ট স্থগিতকরণ কার্যক্রম গ্রহণ করে।
ফেসবুক, গুগল, ইউটিউবকে দেশের বিভিন্ন বিষয়ে উসকানিমূলক ও উগ্রবাদী কনটেন্টসহ বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর সব কনটেন্ট সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করা হবে জানিয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যমগুলাে যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র সরকারের রেজিস্টার্ড প্রযুক্তি কোম্পানি, সে অনুযায়ী অন্য কোনো দেশের কোনাে অনুরােধ প্রতিপালন করার বিষয়ে তাদের বাধ্যবাধকতা নেই। তবে তারা তাদের নিজস্ব নীতিমালা অনুসরণ করে প্রয়ােজনীয় কার্যক্রম সম্পাদন করে।
তিনি বলেন, এছাড়া সরকারের অনুমােদনক্রমে ডাক ও টেলিযােগাযােগ বিভাগের আওতাধীন ডিপার্টমেন্ট অব টেলিকমে (ডট) স্থাপিত সাইবার থ্রেট ডিটেকশন অ্যান্ড রেসপন্স (সিটিডিআর) নামে কারিগরি সিস্টেমের মাধ্যমে স্পর্শকাতর/আপত্তিকর ওয়েবসাইট, ডোমেইন, ব্লগ বন্ধ করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়ে থাকে। ইতােমধ্যে ডাক ও টেলিযােগাযােগ বিভাগের মন্ত্রীর নির্দেশক্রমে বাংলাদেশ থেকে ২২ হাজারের বেশি পর্নোগ্রাফি এবং অনলাইন জুয়ার সাইটে প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, সম্প্রতি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নামে অবমাননাকর পােস্ট এবং আপত্তিকর কনটেন্ট অপসারণে বিটিআরসি সামাজিক যােগাযােগমাধ্যম তথা ফেসবুকের সঙ্গে তাৎক্ষণিক যােগাযােগ করে তাদের সহায়তায় পাঁচটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং অন্য একটি অ্যাকাউন্ট থেকে আপত্তিকর পােস্ট অপসারণ করা হয়েছে।