ভালোবাসা, সম্প্রীতি ও দেশপ্রেমের বার্তা দিয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে শেষ হলো হলো দ্বিতীয় অদ্বৈত গ্রন্থমেলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 24 February 2024, 27 বার পড়া হয়েছে,

নিজস্ব প্রতিবেদক : বর্ণাঢ্য আয়োজনে শেষ হলো দ্বিতীয় অদ্বৈত গ্রন্থমেলা। মেলার শেষ দিনের কর্মসূচি ছিল কবি কণ্ঠে কবিতা পাঠ, একক ও দলীয় আবৃত্তি, নাটক এবং সংগীত অনুষ্ঠান। এদিন বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত না হলেও বৃষ্টি শেষ হওয়ার পর থেকেও মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার পর শুরু হয় নানান পরিবেশনা, যা একনাগাড়ে মধ্যরাত অবধি চলতে থাকে। এসময় বিভিন্ন স্টলে স্থানীয় লেখকসহ দেশবিদেশের নানা লেখকের অসংখ্য বই বিক্রিও চলতে থাকে।

সমাপনী অনুষ্ঠানে হেলাল উদ্দিন হৃদয় ও মনিরুল ইসলাম শ্রাবণের উপস্থাপনায় কবি কণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থানীয় কবিগণ। একক আবৃত্তি উপস্থাপন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশিষ্ট বাচিকশিল্পী মোঃ মনির হোসেন, ভোলা থেকে আগত বাচিকশিল্পী শামস মিঠু, ঢাকা থেকে আগত বাচিকশিল্পী সৈয়দ ফয়সাল আহমেদ। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করেন তিতাস আবৃত্তি সংগঠনের শিল্পীবৃন্দ। সংগীত পরিবেশন করেন সুরতাল সঙ্গে নিকেতনের শিল্পীবৃন্দ। অনুষ্ঠানে অদ্বৈত মল্লবর্মণ জীবন কাহিনি নিয়ে রচিত নাটক ‘অদ্বৈতের অল্প কাহিনি’ পরিবেশন করে গোর্কণঘাটের মল্লবর্মণ সম্প্রদায়। এছাড়াও অদ্বৈত গবেষণায় অনন্য ভূমিকা রাখার জন্য অদ্বৈত গবেষণার পথপ্রদর্শক, অধ্যাপক শান্তনু কায়সারকে (মরনোত্তর) অদ্বৈত সাহিত্য পুরস্কার-২০২৪ ঘোষণা করা হয়। যা পরবর্তীতে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

মেলায় সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন অদ্বৈত গ্রন্থমেলার আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কবি মো. আ. কুদদূস। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন- তিতাস নদী, অদ্বৈত মল্লবর্মণ, গোকর্ণঘাট- আমাদের সম্পদ ও ঐতিহ্য। এই সম্পদ ও ঐতিহ্য আমাদেরকেই রক্ষা করতে হবে। তিনি অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠার নানা পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বলেন- এই গ্রন্থাগারকে কেন্দ্র করে এখানে একটি দৃষ্টিনন্দন স্পট গড়ে তোলা হবে। দেশবিদেশের পর্যটকরা অদ্বৈত মল্লবর্মণ সম্পর্কে জানতে ও গবেষণা করতে এখানে আসবেন। এখানে অদ্বৈত ভাস্কর্য তৈরি করা হবে, লাইব্রেরি কার্যক্রম ও মেলার মাঠ সম্প্রসারণ করা হবে। এখানে মল্লবর্মণ পাড়ার ছেলেমেয়েসহ গোকর্ণঘাটের ছেলেমেয়েদের নানান বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। তারা এখান থেকে অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবে। তিনি বলেন- এই পাঠাগার গোকর্ণঘাটবাসীর সম্পদ। এটি রক্ষণাবেক্ষণ গোকর্ণঘাটবাসীকেই করতে হবে। এসময় তিনি গোকর্ণঘাটের রাস্তার ড্রেন সহ নানা উন্নয়ন কাজের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মো. আ. কুদদূস বক্তব্যে আরও বলেন- আমরা সমাজের কাছে ভালোবাসা, সম্প্রীতি, দেশপ্রেম ও মানবতার কথা ছড়িয়ে দিতে চাই। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এখানকার মানুষ একে অপরকে ভালোবাসবে। এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে, তাদের মনস্তাত্ত্বিক উন্নয়নে কাজ করবে। যাতে কোনো মানুষ নিজের বাস্তুভিটা ছেড়ে অন্য কোথায় যেতে না হয়। তিনি এই গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা ও অদ্বৈত গ্রন্থমেলা আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলরবৃন্দ, কর্মকর্তা-কর্মবৃচারীবৃন্দ, জেলার সাহিত্য-সংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিকবৃন্দ ও সামাজিক সংগঠনের ব্যক্তিবর্গ এবং গোকর্ণঘাটবাসীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।