রোহিঙ্গাদের নিপীড়নকারী অং সান সু চি অসুস্থ

আন্তর্জাতিক, 5 September 2023, 314 বার পড়া হয়েছে,
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারে আটক প্রাক্তন নেত্রী অং সান সু চি অসুস্থ, একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। গ্রেপ্তারের ভয়ে সূত্রটি পরিচয় প্রকাশ করেনি। সূত্রটি জানায়, সু চির দাঁতের মাড়ি ফুলে গেছে। ভালোভাবে খাবার খেতে পারছেন না।

এ ছাড়া বমি ভাব এবং সঙ্গে হালকা মাথা ব্যথা আছে। বাইরে থেকে একজন চিকিৎসক এনে চিকিৎসা করার অনুরোধ জানানো হলেও দেশটির জান্তা সরকার অনুমতি দেয়নি। ফলে ৭৮ বছর বয়সী নোবেল বিজয়ী প্রাক্তন নেত্রীকে কারাগার বিভাগের চিকিৎসকরাই চিকিৎসা দিচ্ছেন।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে ২০২১ সালের গোড়ার দিকে অশান্তি শুরু হয়।

যখন সামরিক বাহিনী সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে এবং সামরিক শাসনের বিরোধীদের ওপর দমন শুরু করে। এতে হাজার হাজার মানুষের জেল হয় এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে। ১৯টি ফৌজদারি অপরাধের জন্য সু চি ২৭ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। তাকে উসকানি, নির্বাচনী জালিয়াতি, দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়।

তবে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সু চি এবং অভিযোগের বিরুদ্ধে আপিল করছেন।
গত জুলাই মাসে তাকে রাজধানী নেপিতাওতে কারাগার থেকে গৃহবন্দি করা হয়েছিল। মিয়ানমারের নির্বাসিত জাতীয় ঐক্য সরকার, সামরিক শাসনের বিরোধীরা এবং সু চির পূর্ববর্তী সরকার বলেছে, রাজনৈতিক বন্দিদের স্বাস্থ্যসেবা এবং নিরাপত্তা দেওয়া সামরিক জান্তার দায়িত্ব। জাতীয় ঐক্য সরকারের মুখপাত্র কিয়াও জাও সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত অং সান সু চিসহ সব রাজনৈতিক বন্দিকে স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তার জন্য জান্তাকে চাপ দেওয়া।

অনেক দেশের সরকার সু চি এবং অন্য হাজার হাজার রাজনৈতিক বন্দির নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে, যার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং গ্রেট ব্রিটেনও রয়েছে। তাদের নিষেধাজ্ঞার তীর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর দিকেও তাক করা রয়েছে।

অনেকে ধারণা করেন রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন-নিপীড়ন এর ফসল ভোগ করছেন সু চি।
ব্রিটেনের অক্সফোর্ড শহরের নগর কাউন্সিল মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিকে দেয়া সম্মান প্রত্যাহার করে নেয় ২৬ নভেম্বর ২০১৭ সালে। অক্টোবরে তার এ খেতাব প্রত্যাহারের পক্ষে ভোট দেয় কাউন্সিল। নগর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মিয়ানমার রোহিঙ্গা মুসলিমদের প্রতি যে আচরণ করছে, তাতে মিজ সু চি আর ‘ফ্রিডম অব দি সিটি’ নামের ওই পুরস্কারের যোগ্য নন। মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতার কারণে কয়েক লক্ষ মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। দেশটিতে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকার সময়ে বছরের পর বছর মিজ সু চি গৃহবন্দী ছিলেন। তিনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সোচ্চার থাকতে দেখা গেছে তাকে। কিন্তু দেশটিতে রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর যে ভাবে নির্যাতন হয়েছে তাতে করে মিজ সু চির ভূমিকায় হতবাক হয়েছেন বিশ্বের অনেক নেতারা। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল নিন্দা জানিয়েছে এই নির্যাতনের। এদিকে সেন্ট হাগ’স কলেজ যেখানে সু চি পড়াশোনা করেছিলেন সেখান থেকেও তার ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছিল।