এহসানুল হক রিপন,ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের কাজীপাড়া থেকে ১৫ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণের ১০দিন পর ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৯-এর সিপিসি-১ হবিগঞ্জের সদস্যরা।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের আনোয়ারপুর গ্রাম থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় অপহরণকারী বোরহান উদ্দিনকে (২৮) গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার বোরহান উদ্দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার ভাটামাথা গ্রামের রফিক মিয়ার ছেলে।ভুক্তভোগী সদর উপজেলার একটি স্কুলের ছাত্রী। তার বাড়ি সদর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামে। দুপুরে উদ্ধারকরা স্কুল ছাত্রীকে র্যাবের পক্ষ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় হস্তান্তর করার পর পুলিশ ওই স্কুল ছাত্রীকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। শুক্রবার বিকেলে র্যাব সিপিসি-১-হবিগঞ্জ থেকে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওই স্কুল ছাত্রীর বাবা র্যাব-৯-এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগে করে জানায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার সময় তার কন্যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাজীপাড়া থেকে অটোরিকশা দিয়ে শহরের কাউতলী যাওয়ার পর কাউতলী গ্রামের গলিপথে যাওয়ার পথে বোরহান উদ্দিনসহ তার অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জন সহযোগী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রের ভয়ে দেখিয়ে তার কন্যাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
পরে তিনি এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা ও র্যাব-৯-এর সিপিসি-১ হবিগঞ্জ ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব সদস্যরা ওই স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধারে অভিযানে ও ছায়া তদন্ত শুরু করেন।এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়নের আনোয়ারপুর গ্রাম থেকে স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার ও অপহরণকারী বোরহান উদ্দিনকে (২৮) গ্রেফতার করা হয়।এ ব্যাপারে র্যাব-৯-এর সিপিসি-১-হবিগঞ্জ ক্যাম্পের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান সাংবাদিকদের জানান, গ্রেফতার বোরহান উদ্দিন বিবাহিত ও তিন সন্তানের জনক। তিনি সদর উপজেলার একটি মসজিদে ইমামতি করেন। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ওই ছাত্রীকে নানাভাবে ফুসলানোর চেষ্টা করে আসছিলেন। তাকে ফুসলাতে না পেরে পরবর্তীতে সহযোগীদের নিয়ে তাকে অপহরণ করেন।গ্রেফতার বোরহান উদ্দিন প্রকৃতপক্ষে একজন অপহরণকারী ও ধর্ষক। এর আগেও তিনি ১০ বছরের এক শিশুকে অপহরণ ও ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত হন। তার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এ- একটি ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা চলমান রয়েছে। (মামলা নং- না. শি. ২৪৪/১৯ইং ও আখাউড়া থানার মামলা নং-০১, তারিখ ০১/০২/২০১৯ইং জিআর-৩৭/১৯)। ওই মামলায় তিনি দীর্ঘ ১১ মাস হাজতবাস করে জামিনে মুক্ত পেয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে আবারও একই ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে।এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ সোহরাব আল হোসাইন বলেন, শুক্রবার দুপুরে র্যাবের পক্ষ থেকে উদ্ধার করা স্কুল ছাত্রী ও গ্রেপ্তারকৃত বোরহান উদ্দিনকে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ও বোরহান উদ্দিনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
