চাঁদপুর সরকারি কলেজ শিক্ষা বিস্তারে এক অনন্য ভূমিকা রেখে চলছে

শিক্ষাঙ্গন, 13 December 2022, 123 বার পড়া হয়েছে,
মো. রুহুল আমিন : ১৯৪৬ সালের ১৫ জুন আজকের সরকারি চাঁদপুর কলেটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। যা তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী স্থাপন করেছিলেন। প্রথমে কলেজের বর্তমান পশ্চিম পাশে বাঁশের বেড়া দিয়ে কলেজের কার্যক্রম চালু করা হয়। পরবর্তীতে চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন দানশীল ব্যক্তির দান-অনুদানে কলেজটির অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। ১৯৪৬ সালে কলেজটির প্রথম শিক্ষাকার্যক্রম চালু হয় উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী দিয়ে। এই কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ পরেশ চন্দ্র গাঙ্গুলী। ১ মার্চ, ১৯৮০ সালে কলেজটি সরকারি করণ করা হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ চট্টগ্রাম বিভাগীয় র‍্যাংকিংয়ে ৯ম স্থানে উত্তীর্ণ হওয়ার স্বীকৃতি অর্জন করে এই কলেজটি।
এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২ বছর মেয়াদী উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী ও ৩ বছর মেয়াদী স্নাতক (পাস) শ্রেণীতে শিক্ষা দান করা হয়। এছাড়াও এখানে ১৭টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও ১৬টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রীতে পাঠদান করা হয়।
কলেজটিতে বিভিন্ন ধরণের একাডেমিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। যেমন একাডেমিক ভবন, গ্রন্থাগার ইত্যাদি। এছাড়া এখানে পড়াশুনার পাশাপাশি মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বৃত্তির ব্যবস্থা। কলেজটিতে মোট পাঁচটি ভবন রয়েছে।
মূল ভবনে কলেজের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারটি অবস্থিত। এখানে ছাত্র এবং ছাত্রীদের আলাদা রুমে পড়ার সুযোগ রয়েছে। গ্রন্থাগারটি থেকে ১৫০ জন (প্রায়) শিক্ষার্থী একসাথে পড়তে ও বই সংগ্রহ করতে পারে। গ্রন্থাগারে ৩০ হাজারেরও বেশি বই সংগৃহীত আছে। নিয়মিত জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা সমূহ রাখা হয়। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে ১৪ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী এখানে অধ্যয়ন করছেন। এই প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক অসিত বরণ দাস। ১৬.৫৬ একর জায়গার উপর এই কলেজটি স্থাপিত। এই কলেজর সংক্ষিপ্ত নাম চাঁসক।
 কলেজের পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে বিভিন্ন রকম ফুল গাছের সমাহার রয়েছে যা ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বর্ধন করেছে।
পড়ালেখার পাশাপাশি চাঁদপুর সরকারি কলেজে বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের সহশিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে:
বি. এন. সি. সি. :- ময়নামতি রেজিমেন্ট এর অধীনে এই কলেজে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর-এর একটি প্লাটুন রয়েছে।
রোভার স্কাউট :- বাংলাদেশ স্কাউটস-এর অধীনে এই কলেজে একটি রোভার স্কাউট ইউনিট রয়েছে।
রেড ক্রিসেন্ট :- বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি-এর অধীনে এই কলেজে একটি রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট রয়েছে।
বিতর্ক সংগঠন:- চাঁদপুর সরকারি কলেজে আছে একটি  ডিবেট ফোরাম (সিসিডিএফ)।
চাঁদপুর সরকারি কলেজে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠন কার্যক্রম রয়েছে, তাছাড়া রয়েছে ছাত্র সংসদ। যে সকল ছাত্র সংগঠন এখানে রয়েছে তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেঃ-
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ,জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল,সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট,বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন,বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রসেনা,ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ইত্যাদি।
প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হচ্ছেনঃ-
ওয়ালী উল্লাহ নওজোয়ান – গবেষক, রাজনীতিবিদ, ভাষা আন্দোলনের সৈনিক, মুক্তিযোদ্ধা, সংবিধান রচয়িতা ও শিক্ষক। আব্দুল্লাহ সরকার – রাজনীতিবিদ। মো. সবুর খান – ব্যবসায়ী ও ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা। হুমায়ুন ফরীদি – বিশিষ্ট অভিনেতা। মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী – বাংলাদেশ পুলিশের ২৯তম মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি)। সাংবাদিক শফিকুর রহমান – সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ। এস ডি রুবেল – সংগীত শিল্পী।
চাঁদপুর সরকারি কলেজের নীতিবাক্য সমূহঃঃ- শিক্ষা ইমান সেবা।
এই কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত একটি সরকারি কলেজ।
ঠিকানাঃ- কলেজ রোড, নাজিরপাড়া, চাঁদপুর সদর, চাঁদপুর, বাংলাদেশ।
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া।