আখাউড়ায় খর্বাকৃতি সন্তানদের নিয়ে বিপাকে বাবা, সাহায্যের আবেদন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 5 November 2022, 97 বার পড়া হয়েছে,

চার সন্তানসহ মজিবুর রহমান খান বামন বা খর্বাকৃতির। এজন্য অন্য কোথাও কাজ পাচ্ছেন না তিনি। দোকান চালিয়ে কিস্তি মিটিয়ে চার সন্তানকে নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তিনি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর সদরের দেবগ্রামে এ পরিবারের বসবাস। জানা গেছে, মজিবুরের বসবাস করা দেড় শতক বাড়ির জায়গা ছাড়া আর কোনো কিছুই নেই। ধারদেনা করে প্রায় দেড় যুগ আগে বাড়ির পাশে শুরু করেন একটি টং দোকানের ব্যবসা। পাচ্ছেন প্রতিবন্ধী ভাতা ও প্রতিবেশীদের সহযোগিতা। সারাদিন যে বেচাবিক্রি হয় দিন শেষে সমিতির ঋণের কিস্তি আর সাত সদস্যের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন পরিবারের কর্তা মজিবুর রহমান।

মজিবুরের স্ত্রী শারমিন আক্তার সমলা ও বড়ছেলে আশিক খান ছাড়া পরিবারের অন্য পাঁচজনই অস্বাভাবিক।

প্রতিবন্ধীরা হলেন- মজিবুর রহমান খান ও তার চার সন্তান- মো. মাসুক খান (১৮), মো. মহিন খান (১৫), তুহিন খান (১০) এবং একমাত্র কন্যা ফাতেমা খানম (৪)।

বড় ছেলে আশিক খান (২০) এইচএসসি পাশ করেছেন। তিনি সুস্থ স্বাভাবিক। শহরের একটি শো-রুমে কাজ করেন। মজিবুরের খর্বাকৃতির তিন ছেলের মধ্যে মাসুক (এসএসসি দিয়েছে), মাহিন অষ্টম ও তুহিন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে।

এদের মধ্যে তুহিন খিঁচুনি রোগে আক্রান্ত। প্রতি মাসে দুবার ঢাকায় নিয়ে তাকে ডাক্তার দেখাতে হয়। চিকিৎসার খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন মজিবুর।

মজিবুর বলেন, আমার প্রতিবন্ধী সন্তানরা জন্মগতভাবে প্রতিন্ধী না। জন্মের পর দুই বছর বা তার বেশি হলেই এ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। শারীরিক প্রতিবন্ধীকতার কারণে কোনো কাজকর্ম করতে না পারায় এখন দোকান ঘরই তাদের একমাত্র ভরসা।

তিনি বলেন, সমিতি থেকে লোন নিয়ে কিস্তি পরিশোধ করতেই টাকা শেষ হয়ে যায়। দোকানে ঠিকমতো মালামালও কিনতে পারি না। অভাব অনটনে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে।

মজিবুর আরও বলেন, ছোট ছেলে তুহিন খিঁচুনি রোগে আক্রান্ত। ১৫ দিনে একবার ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা করাতে অন্তত ৪-৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়।

প্রতিবন্ধী পরিবারটির দাবি, সমাজের বিত্তবানরা যদি এগিয়ে আসেন তাহলে হয় তো তাদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে।

আখাউড়া পৌরসভার ৮ নাম্বার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. বাবুল সরদার বলেন, একই পরিবারে ৫ জন প্রতিবন্ধী হওয়া খুবই আক্ষেপের বিষয়।

তিনি জানান, আমরা সব সময় তাদের নিজের সন্তানের মতোই দেখছি। তাছাড়া সরকারিভাবে সহায়তা হিসেবে যা কিছু আসে তাদের দেওয়া হয়। আমরা অসহায় পরিবারটির পাশে আছি এবং থাকব। তিনি সমাজের বিত্তবানদেরও সাহায্যের হাত বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন। -(যুগান্তর)