ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার খাগালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পীযুষ কান্তি দাসের বিরুদ্ধে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতির করা আর্থিক অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আরশ আলীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শেষে বিভাগীয় মামলা দায়ের করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইকবাল মিয়া।
জানা যায়,উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নে খাগালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মো.আরশ আলী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পীযুষ কান্তি দাসের বিরুদ্ধে চলতি বছরের গত ১৮ জুলাই লিখিত অভিযোগ করেন। তার লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.খোরশেদ আলম।
লিখিত অভিযোগের সূত্রে জানা, উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নে খাগালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পীযুষ কান্তি দাস ২০০৪ সালে থেকে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি সরকারি নির্ধারিত ফি হতে অতিরিক্ত টাকা আদায়, বিদ্যালয়ে দেরি করে আসা, সরকারি অনুদান আত্মসাৎ, বিদ্যালয় ফাঁকি দিয়ে নিজের ওষুধের দোকান পরিচালনা করা ও বিভিন্ন সময়ে বিদ্যালয়ে ক্লাস না করে অনুপস্থিত থাকারও অভিযোগ করা হয়।
এছাড়াও তিনি বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও সদস্যদের সাথে অশোভন আচরণও করেন অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়।
লিখিত অভিযোগের তদন্ত করেন জেলা সদরের শিক্ষা কর্মকর্তা উম্মে সালমা।
গত ১৭ আগস্ট তদন্ত শেষে লিখিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, শ্রেণি কক্ষের লুকিং গ্লাস স্থাপন, সততা স্টোর, মনবতার দেয়াল, বিজ্ঞান কর্ণার তৈরি,অ্যাকুরিয়াম স্থাপন, শ্রেণিকক্ষের নামকরণ, স্কুল ড্রেস এর জন্য বরাদ্দকৃত টাকা ব্যয় না করে আত্মসাত করেছেন বলে উল্লেখ্য করা হয়।
এছাড়াও ২০২১-২২ অর্থ বছরে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার উপকরণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরক্ষামূলক খাত ও সিএসএসআর খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাত করেছেন বলে উল্লেখ্য করা হয়।
তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গত ২৬ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা
কর্মকর্তা এবং তাকে কেন চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না সে মর্মে দশ কর্ম দিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
খাগালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মো.আরশ আলী বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ও এলাকার কথা চিন্তা করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবর পীযুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দিয়েছি। পরে আমার অভিযোগের প্রেক্ষিতে
তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক পীযুষ দাস বলেন, এ ব্যাপারে আমি এখন পর্যন্ত কোন কাগজপত্র পাইনি।
লিখিত অভিযোগের তদন্তÍ কর্মকর্তা উন্মে সালমা যুগান্তরকে জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরজমিনে তদন্ত শেষে যা সত্যতা পেয়েছি তা উল্লেখ্য করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করেছি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.খোরশেদ আলম বলেন, প্রধান শিক্ষক পীযুষ কান্তি দাসের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা পেয়ে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।