ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১০কোটি টাকা লেনদেন,ভোটারদের শাস্তি দাবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 29 October 2022, 115 বার পড়া হয়েছে,
নিউজ ডেস্ক : সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় অনৈতিক পন্থায় ভোট কিনতে প্রায় ১০ কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। এই নেক্কারজনক ভোট বানিজ্যের অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভোটার তথা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সামনে জেলার সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তারা অভিযোগ করেন,গত ১৭ই অক্টোবর অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া  জেলা পরিষদ নির্বাচনের ১৩৮২ জন ভোটার অর্থাৎ ৫টি পৌরসভার মেয়র-কাউন্সিলর,৯টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান এবং ১০০ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগন তাদের ভোট নিলামে তুলে চরম নৈতিক অধ:পতনের পরিচয় দিয়েছেন। নির্বাচনকালীন তাদের অনৈতিক কর্মকান্ডের বাস্তব অবস্থা অবলোকন এবং গনমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে আমরা উদ্বিগ্ন। তারা ভোটের পবিত্রতা ভুলন্ঠিত করেছেন। তাছাড়া এই ধরনের জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সামাজিক ন্যায় বিচার এবং সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা আশা করা যায়না। টাকার বিনিময়ে শালিস দেনদরবার করে তারা সমাজে শুধু অশান্তির আগুনই ছাড়াবেন। সর্বোপরি প্রান্তিক পর্যায়ে সরকারের সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন তাদের ওপর নির্ভরশীল। ভোটের বিনিময়ে টাকা খাওয়ার তাদের যে মনোভাব পরিলক্ষিত হয়েছে তাতে আমরা নিশ্চিত তাদের মাধ্যমে জেলার উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। প্রকল্পের বরাদ্দ তারা শুধু লুটপাটই করবেন।

মানববন্ধনে সচেতন নাগরিক সমাজের প্রধান সমন্বয়ক কমরেড নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সুজনের সদর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোশারফ হোসেন,জেলা জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সহ-সভাপতি শামসুল আলম,আলী আহমদ ও মো: মালেক মিয়া।

পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এতে বলা হয়- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে  ৫৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। গনমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে প্রতিদ্বন্দি এই প্রার্থীদের ভোট দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে জেলায় ১০ কোটি টাকার বেশী হাতিয়েছেন ভোটাররা। যতো প্রার্থী তাদের দুয়ারে ধর্না দিয়েছেন সবার কাছ থেকেই টাকা রেখেছেন। কোন কোন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তার ভোট বিক্রি করেছেন আড়াই-তিন লাখ টাকাতে। জেলা পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ড তথা সরাইল উপজেলায় সদস্য পদে প্রতিদ্বন্ধি ৫ জনের সঙ্গেই ভোট দেয়ার ওয়াদাবদ্ধ হয়ে লাখ লাখ টাকা নেন ভোটাররা। টাকার সঙ্গে তারা স্বর্ণালংকারও নিয়েছেন এক সদস্য প্রার্থীর কাছ থেকে।  জেলার অন্যান্য আসনের সংসদ সদস্যদেরকে দল সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীকে পাশ করাতে টাকা ঢালতে হয়েছে। এভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা পরিষদ নির্বাচনে সর্বত্র টাকার বিনিময়ে  ভোট  কেনাবেচা হয়। প্রত্যেক ভোটার তাদের নিজের ভোটের নিলাম তুলেন। প্রার্থীরা এরই মধ্যে এনিয়ে মুখ খুলছেন এবং টাকা আদায়ের জন্যে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। টাকা নেয়ার সময় ভোটারদের অনেকে কসম খেয়েছেন,ওজু করে নামাজের জন্যে প্রস্তুত অবস্থায় টাকা গ্রহন করে প্রার্থীকে আশ্বস্থ করেন যে,আমি আপনাকেই ভোট দেব বলে। সংসদ সদস্যদের কাছ থেকে টাকা গ্রহন করে টাকার জন্যে তারা কতোটা বেপড়োয়া ছিলেন তার প্রমান দিয়েছেন। তাদের এসব কীর্তি কান্ড জেলার সর্বত্র ঘৃনার সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে, সাধারণ মানুষ ধিক্কার জানাচ্ছেন। -(সরোদ)