পরশমনি সরকার (৮০) সনাতন ধর্মাবলম্বী এক বৃদ্ধা। আপনজন বলতে তেমন কেউ নেই। বসবাস করতেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার গোয়লনগর ইউনিয়ন পরিষদের পাশে।
জীবনের শেষ সময়টুকু কেটেছে অসুস্থতা আর মানুষের সাহায্যে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মারা যান পরশমনি। তার মৃত্যুর পর আশপাশে কোন হিন্দু পরিবার না থাকায় স্থানীয় মুসলমান যুবকরা শেষকৃত্য সম্পন করার উদ্যোগ গ্রহন করে। তারা পাশের দক্ষিণদিয়া গ্রামে হিন্দুদের সাহায্য চাইলে দুই ধর্মের প্রায় ৩৫/৪০ জন যুবক মিলে শবদাহ সম্পন্ন করেন।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে । এখানে শত বছর ধরে সকল ধর্মের মানুষ পারস্পরিক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে সুখে-শান্তিতে বসবাস করে আসছে। পরশমনির শবদাহই তার অনন্য উদাহরন হয়ে থাকল।
গোয়লনগর ইউপি সচিব শুভ্র দত্ত বলেন, পরশমনির শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য মুসলিম যুবকদের ভূমিকায় সত্যিই আমি মুগ্ধ হয়েছি। এটাই প্রকৃত নাসিরনগর।
শেষকৃত্যে অংশ নেওয়া এনায়েত উল্লাহ রনি নামে যুবক বলেন, এখানে ধর্ম কোন বিষয় নয়। আমরা সকলেই মানুষ। মানবিকতার দিক থেকেই আমরা তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করি।
গোয়ালনগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আজহারুল হক বলেন, একজন হিন্দু বৃদ্ধা মহিলা মারা গেছেন। আমার পরিষদের পাশেই থাকতেন। বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান। তার কোন নিকটাত্মীয় না থাকায় চাঁদা তুলে হিন্দু মুসলিম সবাই তার শবদাহে সহযোগিতা করেছে।
বিজয়লক্ষী কলেজের প্রভাষক বরুন কান্তি সরকার বলেন, এটাই আমাদের প্রকৃত নাসিরনগর। পরশমনির শেষকৃত্যে মুসলমান যুবকরা যে ভূমিকা রেখেছে তা বর্তমান সমাজে অনন্য নজির।