ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভুল চিকিৎসার অভিযোগ, হাসপাতালে ক্ষুব্ধ স্বজনদের হামলা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 21 July 2022, 171 বার পড়া হয়েছে,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় বুধবার (২০ জুলাই) বিকেলে ভুক্তভোগী রোগীর স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালে এসে স্টাফদের মারধর করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে।

ভুক্তভোগী রোগীর বড় ভাই জেলা শহরের উত্তর মৌড়াইল এলাকার বাসিন্দা রউফ খন্দকার অভিযোগ করে বলেন, আমার ছোট ভাই এনামুল হক লিটনের সাথে গতকাল মঙ্গলবার রাতে আখাউড়ায় কয়েকজন যুবকের সাথে ঝগড়া হয়। এসময় সেই যুবকরা তাকে মারধর করে শরীরে কয়েকটি সুই ঢুকিয়ে দেয়। তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর চিকিৎসক জানান,তার শরীর এক্স-রে করতে। রাত প্রায় ১২টার দিকে শহরের জেলরোডে পেশেন্ট কেয়ার নামে একটি হাসপাতালে তাকে এক্স-রে করতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে এক্স-রে করে বুকের ভেতরে একটি সুই পাওয়া যায়। তখন হাসপাতালটিতে উপস্থিত তারিকুল ইসলাম নামে এক চিকিৎসক জানান তিনি অপারেশন করে সুইটি বের করতে পারবেন। পরে ১০ হাজার টাকা চুক্তিতে লিটনের বুকের ভেতরে থাকা সুই অপসারণ করতে অপারেশন শুরু করেন। রাত প্রায় একটার দিকে অপারেশন থিয়েটারে লিটনের বুক কেটে কিছুক্ষণ পর সেই চিকিৎসক জানান, তারপক্ষে এই সুই অপসারণ করা সম্ভব নয়। পরে বুকের কাটা জায়গায় কাপড় ঢুকিয়ে ব্যান্ডেজ করে চিকিৎসক তারেক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। লিটনকে ব্যান্ডেজ করে আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ দুপুরে সেখান থেকে জানানো হয় সুইটি বুকের আরও গভীরে চলে গেছে, তারাও অপরাগতা প্রকাশ করে। এরপর কুমারশীল মোড়ে আরও একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিকেলে সেই হাসপাতাল থেকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। চিকিৎসক তারিকুলের অবহেলায় ও অপচিকিৎসার কারণে আমার ভাইয়ের শরীরের গভীরে সুইটি ডুকে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। লিটনের শারীরিক অবস্থার কথা জেনে বিকেলে আমাদের স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে গেলে কিছুটা বাকবিতণ্ডা হয়। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আমরা লিখিত অভিযোগ দিব।

পেশেন্ট কেয়ার শিশু ও জেনারেল হাসপাতালে পরিচালক (প্রশাসন) ইয়াছিন চৌধুরী বলেন, এই চিকিৎসক আমাদের হাসপাতালে বসেন না। বাইরে থেকে রোগী নিয়ে আসেন তিনি। বিকেলে আমাদের হাসপাতালে কিছু যুবক এসে স্টাফদের মারধর করে এবং হাসপাতালের সামনে থাকা কিছু মোটরসাইকেল ভাংচুরের চেষ্টা চালানো হয়।

অভিযুক্ত চিকিৎসক তারিকুল ইসলামের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

খবর পেয়ে হাসপাতালে আসা ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১নং শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এস.আই) হুমায়ূন কবির বলেন, খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে এসেছি। উভয় পক্ষের সাথে কথা হয়েছে। আমরা বলেছি, কারো কোন অভিযোগ থাকলে লিখিত ভাবে থানায় দিতে। লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. একরামউল্লাহ বলেন, চিকিৎসক বা হাসপাতালের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।