এই দূর্ভোগ লাঘব হবে কোন পন্থায়

জনতার কন্ঠ, 14 May 2022, 573 বার পড়া হয়েছে,

বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল সমৃদ্ধ একটি দেশ। চারিদিকে উন্নয়নের ছোঁয়া পাল্টে গেছে দেশের দৃশ্যপট। যোগাযোগ ব্যাবস্থা উন্নয়ন এ দেশের পেক্ষাপটে বিপ্লব। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহজাদাপুর গ্রামের জন্য এ উন্নয়নের ছোঁয়া যেন আকাশকুসুম চাওয়া। মলাইশ-শাহজাদাপুর রাস্তা অবলোকন করলে দেখা যাবে এ যেন পঞ্চাশ বছর আগের বাংলাদেশর স্মৃতিচিহ্ন। নানান দাবী আর্তনাদে ও সংস্কার হচ্ছে না এরাস্তার। যার কুফল হিসেবে অগ্রগতি থেকে পিছিয়ে শিক্ষা-দীক্ষায়, কৃষিক্ষেত্রে সমৃদ্ধশালী বিশ হাজার জনগণের এই গ্রাম।

পৃথিবীর ভূখণ্ডে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ স্থান পেয়েছে নয় মাস যুদ্ধ করে। সেই স্বাধীনতা অর্জনের পঞ্চাশ বছরেরও অধিক সময় যাবৎ শাহ্জাদাপুরের মানুষ যুদ্ধ করে যাচ্ছে পাকা রাস্তার জন্য, কিন্তু ফলাফল শূন্য। এসময়ের মধ্যে অনেক অভিভাবকের আবির্ভাব হয়েছে শাহ্জাদার মাটিতে, অনেকেই রাস্তা করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে জনতার ভোট।

ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে, কিন্তু ভাগ্যবদলায়নি এই গ্রামের জনগণের। নানান আশ্বাস পরিকল্পনা, আন্দোলনেও আসেনি সুফল। ২০ হাজার মানুষের হাহাকার একটি রাস্তায়। এই দূর্ভোগ লাঘব হবে কোন পন্থায়।

সংশ্লিষ্টদের কাছে আহ্বান অতীতে যারা ছিল, বর্তমানে তাঁরা নেই আপনারাও একদিন থাকবেন না, পারলে কিছু করে যান সাধারণ জনতার জন্য, আজীবন শ্রদ্ধাভর স্মরণ করবে।

এই গ্রামের তিনপ্রজন্ম-চার প্রজন্ম ক্রমশ স্বপ্ন দেখেই যাচ্ছে কিন্তু প্রজন্ম পেরুচ্ছে পূরণ হচ্ছে না স্বপ্নের। প্রত্যাহিক জীবনে রাস্তার এই বেহাল দশার প্রভাব পরছে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে প্রতিটি কাজে। এ গ্রামের সকল সুখ যেন থমকে আছে যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য। গর্ভবতী মায়ের কাছে এরাস্তা যেন মরণ ফাঁদ, বয়োবৃদ্ধার জন্য এরাস্তা পাড়ি যেন দূর্সাহসিক কাজ। অথছ প্রত্যদিনই চলতে হচ্ছে যন্ত্রণাকে পূঁজি করে। এরাস্তার কারণে ব্যবসায়িকদের লাভাংশ সাধারণ জনতার কাঁধে বোঝা হয়ে ঝুলে, রাস্তার জন্য কন্যাদায়গ্রস্থ অনেক পিতা-মাতা। এই অঞ্চলের বৃহৎ অংশ জুড়ে রয়েছে শিল্পকারখানা গড়ে তুলার মতো পর্যাপ্ত জায়গা, নিজ গ্রামেই রয়েছে অনেক উদ্যোগতা বাহির হতেও আসে প্রস্তাবনা সবকিছুর বাধা এই রাস্তা। যার জন্য উন্নয়নের ছোঁয়া পেয়েও পাচ্ছে না সাধারণ জনগণ, গড়ে উঠছে না শিল্প কারখানা। হাজারো মানুষের কর্মসংস্থানের স্বপ্ন বুনলেও একটি রাস্তার জন্য তা বিনষ্ট হচ্ছে। এ গ্রামের জন্য যা বিষফোঁড়া।

রাস্তা পাকা হবে কোলের শিশু হতে বৃদ্ধা পযর্ন্ত সকলেরই স্বপ্ন, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য আজ অব্দি নানা উদ্যোগ আবেদনের পরও টনক নাড়ে নি কারো। সংসদে বারংবার আবেদন তুলেও আসে নি সুফল।স্থানীয় সরকার প্রশাসন ও দিতে পারে না কোন আশ্বাস। এ যেন উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় ২০ হাজার জনগণের অসহায়ত্বের আর্তনাদ।

শাহ্জাদাপুর গ্রামে শিক্ষার হারও ভালো, অর্থনৈতিক অবস্থাও ভালো অভাব শুধু ঐক্যের। আমার বিশ্বাস ঐক্যের জন্য রাস্তার খারাপ অবস্থা আর অবহেলা আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা, আন্দোলন সুফল বয়ে আনবে আমি মনে করি।

শাহজাদাপুরের মানুষের অসহায়ত্বের আর্তনাদ লাঘবে নিশ্চুপ স্থানীয় সরকার থেকে মন্ত্রীপরিষদ, উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এ যেন তীব্র লজ্জার দৃষ্টান্ত। তাই উপায়ন্তর হয়ে গ্রামের সকলে সংগঠিত হয়ে দৌড়ঝাঁপ করতে হবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। নতুবা নিজেদের আর্থিক উদ্যোগেই নিতে হবে ব্যাবস্থা যদিও এত বৃহৎ রাস্তার খরচ মেটানো নিজস্ব আর্থিক উদ্যোগে মরার উপর হবে খাড়া ঘা।

আহ্বান রইল ঐক্যের মাটিও মানুষের প্রতি…

লেখক : শিব্বির আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক
শাহজাদাপুর ইউনিয়ন ছাত্র কল্যাণ সংসদ।