জুয়েল মিয়া,ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ভুঁইয়া’র পদত্যাগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার (১৩মে) সকালে মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে উপজেলার সকল ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা তার পদত্যাগের জোরালো দাবি জানান।
তাঁরা উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও উনার আত্মীয়স্বজন মাদক ব্যবসায় জড়িতসহ নানা অভিযোগ তোলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আখাউড়া পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ তাকজিল খলিফা কাজলের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জালাল উদ্দীন, উত্তর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান, ধরখার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোঃ সাফিক, মোগড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এম এ মতিন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মুরাদ হোসেন ভুঁইয়া, জেলা পরিষদ সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান নাজিম।
সংবাদ সম্মেলন অসুস্থতার জন্য উপস্থিত না থাকায় মনিয়ন্দ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাহবুবুল আলম চৌধুরী দিপক ও উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন সফিক আলেয়া ফোনে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবি জানান।
চেয়ারম্যানগন তাদের বক্তব্যে বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হস্তক্ষেপের জন্য তাঁরা এলাকায় কোনো উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিতে পারছেন না। তাঁদের এলাকার জনগণের কোনো দাবি-দাওয়া পূরণ করতে পারছেন না। এতে জনগণ থেকে তাঁরা ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন। তিনি সকল কাজ শুধু তার নিজের ওয়ার্ড ছোট কুড়ি পাইকার নামে বরাদ্দ করেন বিভিন্ন প্রকল্প দেখিয়ে।এডিপি’র টাকা তিনি (পিআইসি) করে উত্তোলন করেন। এতে অনেক ক্ষেত্রেই প্রকল্প কমিটিও বিধি মোতাবেক করা হয়নি। এসব প্রকল্পে কোনো কাজও করা হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়। এই সাড়ে তিন বছরে তিনি কোথাও কোন কাজ করেনি শুধু ছোট কুড়ি পাইকা ছাড়া।
সংবাদ সম্মেলনে পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ভুঁইয়া’র বিষয়ে উনার পক্ষে একমাত্র আমিই সবচাইতে বেশি অবস্থান নিয়েছি।উনি চেয়ারম্যান হওয়ার পর উনাকে আমি বলেছিলাম আপনি যেহেতু চেয়ারম্যান হয়েছেন মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় আছেন আপনি সমস্ত জায়গায় সমবন্টন করে কাজ কইরেন। কিন্তু উনি সমবন্টন করে কাজ করে নাই। গত এক বছর আগে ভাইস চেয়ারম্যান মুরাদ সাহেব বলছে। আমি উনাকে আবারও বলছি।উনি বিভিন্ন জায়গায় প্রকল্প কমিটি করে তার মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে (পিআইসি) করে কাজ করে। আমি বলছি পিআইসি করে কাজ কইরেন না। এগুলি করে কাজ করলে অনিয়ম হবে। আপনার মত লোক অনিয়ম করলে শুনতে খারাপ দেখাবে। তিনি পিআইসি করে গত তিন বছরে ২০ টি রাস্তা দেখিয়েছে ছোট কুড়িপাইকা। কোন গ্রামে কি ২০টি রাস্তা থাকে।
তাছাড়া টিআর, কাবিখা ও মন্ত্রী মহোদয়ের প্রকল্প আছে। সব মিলিয়ে উনি বেশ অনিয়মে জড়িয়ে গেছেন।মন্ত্রী মহোদয় কে বলার পর মন্ত্রী মহোদয় উনাকে ফোনে শ্বাসিয়েছেন গত এক বছর আগে। তারপরও তিনি পরিবর্তন হয়নি। উনাকে এই অনিয়ম থেকে থামানো যাচ্ছে না। আমি উনার এসব অনিয়ম দুদকের মাধ্যমে তদন্ত করার দাবি জানিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উনার পদত্যাগ দাবি করছি।
এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ভুঁইয়া’র বলেন, কোন প্রমাণ ছাড়া এসব মৌখিক অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। আমি যদি কোন অনিয়ম বা দুর্নীতি করে থাকি তাহলে তদন্ত করে তার সত্যতা পাইলে আমার বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয় আমি তা মাথা পেতে নিবো।