ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘূর্ণিঝড়ে ৪ শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, 11 April 2022, 183 বার পড়া হয়েছে,

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন উপজেলায় বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ৪ শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসময় শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। ঝড়ে অন্তত ৬৫ জন নারী-পুরুষসহ শিশু আহত হয়। আহতরা বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছেন।

ঘূর্ণিঝড়ে বিভিন্ন গ্রামের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। রবিবার দিবাগত রাত ৩টা ২০ মিনিটে জেলার নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট ও চাতলপাড় ইউনিয়নের ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায়। এতে এই দুটি ইউনিয়নের ছয়টি গ্রাম কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভলাকূট, কান্দি, বালিখোলা, দূর্গাপুর, খাগালিয়া, কাহেতুড়া ও বাঘি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

পূর্ব বালিখোলা প্রাথমিক বিদ্যালয় ধসে পড়ায় বিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অভিজিত রায় জানান, ঘূর্ণিঝড়ে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

একই সময়ে জেলার সরাইল উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে পাকা ধান ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

এসময় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। উপজেলা অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঝড়ের আঘাতে অধিকাংশ ঝুপড়ি ঘর, টিনশেড ঘর, গাছপালা ভেঙে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো খোলা আকাশের নিচে জীবনযাপন করছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আকরাম হোসেন বলেন, ঝড়ে নুয়ে পড়া পাকা ধানের তেমন ক্ষতি হবে না।

তবে শিলা বৃষ্টিতে সামান্য ক্ষতি হয়েছে। আমরা ঝড়ে ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করছি। একই সাথে কৃষকরা যেন ক্ষতির মুখে না পড়েন, সেদিকে লক্ষ রেখে কৃষি সম্প্রসারণের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করবে।
এছাড়া বিজয়নগর উপজেলায় ঝড়ে শতাধিক ঘরবাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। ঝড়ে গাছপালা, ফসলি জমি ও বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার চরইসলামপুর ইউনিয়নের নাজিরাবাড়ী, মোহাম্মদপুরসহ কয়েকটি গ্রামের বাড়িঘর ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়। তবে এতে কারও হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। পাকা বোরো ধান ক্ষেত ও লিচু ও আম বাগানে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চর ইসলামপুর, চান্দুরা, চম্পকনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ জানান, ঝড়ে ঘর বাড়ি লন্ডভন্ড হয়েছে। কয়েক হাজার হেক্টর পাকা বোরো ধানের জমি নষ্ট হয়েছে। শিলা বৃষ্টির কারণে মৌসুমি ফল আম, লিচু, মাল্টা বাগান ও বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ শেষে সার্বিক সহায়তা করা হবে।