উপমহাদেশের প্রখ্যাত ভারতীয় সংগীতশিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় মারা গেছেন। মৃত্যুকালে এই কিংবদন্তী শিল্পীর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমেছে সংগীতজগতে।
এদিন সন্ধ্যায় ফের সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছিল। আবারও আইসিইউতে নিতে হয়েছিল তাকে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, পেটের যন্ত্রণায় তীব্র কষ্ট পাচ্ছিলেন তিনি। সকালে তার রক্তচাপের মাত্রাও দ্রুত ওঠা-নামা করছিল।
ভেসোপ্রেসার সাপোর্টে রাখা হয়েছিল বর্ষীয়ান শিল্পীকে। পেটে ব্যথার জন্যও চিকিৎসা চলছিল তার। তার মাঝেই এল দুঃসংবাদ, হাসপাতালেই থেমে গেল তার দীর্ঘ লড়াই। জানা যায়, গত ২৬ জানুয়ারি বুধবার সন্ধ্যা থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন এই প্রবীণ সঙ্গীতশিল্পী।
পরদিন তাকে গ্রিন করিডোর করে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছিল সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে তার দু’দিন আগেই ভারতের পদ্মশ্রী পদক প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তিনি। শাস্ত্রীয় সংগীত থেকে চলচ্চিত্রের গান, আধুনিক গানের অ্যালবাম-সব মিলিয়ে তার কাজের পরিধি অনেকটাই। ১২ বছর বয়স থেকে গান গাইছেন।
সংগীতের পেছনে জীবনের ৭৫টি বছর ব্যয় করেছেন। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও তার জুটি বহু বছর ধরে বাঙালির মনজুড়ে আছে। একসময় সুচিত্র সেনের কণ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। ‘এ শুধু গানের দিন, এ লগন গান শোনাবার’, ‘মধুমালতী’, ‘হয়তো কিছুই নাহি পাব’, ‘তুমি নাহয়’, ‘আয় বৃষ্টি ঝেঁপে’, ‘যমুনা কিনারে’সহ অনেক কালজয়ী গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।
১৯৭১ সালে ‘জয়জয়ন্তী’ ও ‘নিশিপদ্ম’ ছবিতে গান গেয়ে শ্রেষ্ঠ গায়িকা হিসেবে ভারতের জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন সন্ধ্যা। এ ছাড়া ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকার তাকে ‘বঙ্গবিভূষণ’ উপাধিতে সম্মানিত করে।
১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ায় জন্ম গ্রহণ করেন সন্ধ্যায় মুখোপাধ্যায়। নরেন্দ্রনাথ এবং হেমপ্রভা দেবীর ছয় সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন কনিষ্ঠ। ১৭টি হিন্দি চলচ্চিত্রে নেপথ্য গায়িকা হিসেবে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।