১০ বছর বয়সে রাজশাহীর আত্রাই উপজেলায় হারিয়ে যান কুদ্দুছ মুন্সী। ৭০ বছর পর সেই কুদ্দুছ ফিরলেন নিজ মায়ের কাছে। অথচ একই উপজেলায় বড় হয়েছেন বিয়ে করেছেন কুদ্দুছ।
মূলত এক ফেসবুক পোস্টের কল্যাণে ৭০ বছর পর নিজের মা ও পরিবারকে খুঁজে পেয়েছেন কুদ্দুছ মুন্সী।
দিন দশেক আগে আইয়ূব আলী নামের পরিচিত একজনের ফেসবুক আইডিতে হারিয়ে যাওয়ার গল্প বলেন আব্দুল কুদ্দুছ।
সেখানে তিনি শুধু পিতা-মাতা ও নিজ গ্রাম বাড্ডার নাম বলতে পারেন। পরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা বাড্ডা গ্রামের বাসিন্দারা সাড়া দিতে থাকেন। একপর্যায়ে আব্দুল কুদ্দুছকে খুঁজে পান তার পরিবারের সদস্যরা।
শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় পার্শ্ববর্তী উপজেলার বাঞ্ছারামপুরের আশ্রাফবাদ গ্রামের বোন ঝড়না বেগমের বাড়িতে মা ছেলের দেখা হয়।
এ সময় আবেগে আপ্লুত হয়ে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা। বিলাপ করে বলতে থাকেন, ‘কুদ্দুছ তুই একদিন ফিরে আসবি এটা আমি বিশ্বাস করতাম, আল্লার কাছে এই দোয়াই করেছি। আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করেছেন। ১০ বছরের কিশোর কুদ্দুছ মুন্সি এখন ৮০ বচর বয়সী প্রবীণ। তার তিন ছেলে ও ৫ মেয়ে রয়েছেন। তার গ্রামের বাড়ি নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড্ডা গ্রামে। তবে গ্রামে কেউ বাস করেন না। মা মেয়ের সঙ্গে থাকেন।
কুদ্দুছ মুন্সীরও দৃঢ় বিশ্বাস ছিল একদিন মায়ের দেখা পাবেন।
তিনি জানান, ‘হারিয়ে যাওয়ার পর রাজশাহী জেলার আত্রাই উপজেলার সিংশারা গ্রামের সাদিক মিয়ার বাড়িতে বড় হয়েছেন তিনি। পরবর্তীতে বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করছেন।
আপ্লুত কণ্ঠে কুদ্দুছ বলেন, আমার মা ও বোনদের খোঁজার অনেক চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস ছিল একদিন আমার মার সন্ধান আমি পাব। মায়ের বুকে ফিরতে পেরে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ আমার আমাকে মনে হচ্ছে। বাকি জীবনটা মার সঙ্গেই থাকব।
ভাইকে পেয়ে মায়ের মতোই খুশি কুদ্দুছের বোন ঝরনা বেগম। বলেন, আমার মা সবসময় বলতেন একদিন আমার ছেলে ফিরে আসবে। আল্লাহ আমার মায়ের প্রার্থনা কবুল করেছেন। আমরা আমার ভাইকে ফিরে পেয়েছি।
এদিকে দাদি, ফুফুদের পেয়ে খুশি কুদ্দুছ মুন্সীর ছেলে হাফেজ সোহেল। তিনি বলেন, ‘কোনোদিন ভাবিনি আমার দাদিকে দেখতে পাব। আমার বাবা তার মাকে ফিরে পাবে। আল্লাহ আমাদের সহায় হয়েছে, আল্লার কাছে শুকরিয়া।