টুঙ্গিপাড়ায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ’র বঙ্গবন্ধুর ১০২তম জন্মবার্ষিকী পালন

সারাদেশ, 27 March 2022, 217 বার পড়া হয়েছে,

মোঃ রুবেল মিয়াঃ হৃদয়ে পিতৃভূমি” প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২-তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে গত ২৫ মার্চ ২০২২ খ্রিঃ, পুণ্যভূমি গোপালগঞ্জে টুঙ্গিপাড়ায় আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, জয় বাংলা ক্যাম্পেইন, শিশুদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ ও সিংগীপাড়া, গিমাডাঙ্গা মল্লিক মাঠ, চরপাড়া আশ্রয়ন প্রকল্পের পরিবারের মাঝে খাদ্য ও বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর ১০২তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য জননেতা আব্দুর রহমান বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ যে ভাবে এখন দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছে খুব অচিরেই এটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রধান সহযোগী সংগঠন হয়ে যাবে। দেশের সর্ব ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ব্যাপক ভূলিকা পালন করছে এবং আগামী দিনেও তারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে।

তিনি বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ করোনাকালে দেশের মানুষকে সহযোগিতা করেছে। সামনের দিনেও আপনারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার পাশে থাকবেন। যে কোন অপশক্তিকে রুখে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। বিএনপি জামাত যদি দেশের কোন ক্ষতি করতে চায় বা দেশের মানুষের কোন ক্ষতি করতে চায় তাহলে প্রয়োজনে মাঠে নেমে তাদের প্রতিহত করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করবেন।

বঙ্গবন্ধুর কথা স্বরণ করে তিনি বলেন, শেখ মুজিবের জন্ম হয়েছিলো বলে এ দেশে ভাষা আন্দোলন হয়েছে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। যার ডাকে লক্ষ লক্ষ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে, ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতার লাল সূর্য। ঘাতকেরা বলেছিলো যে শেখ মুজিবকে হত্যা করেছি তার বিচার কখনো হবে না। যে জয় বাংলা কে নির্বাসনে পাঠিয়েছে! বাংলাদেশে সেটি আর কখনো ফিরে আসবে না! কিন্তু আজ বাংলার মাটিতে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে। জয় বাংলা এখন প্রত্যেকটি ঘরে ঘরে উচ্চারিত হয়। তারা বাংলাদেশ থেকে স্বাধীনতার চেতনা মুছে ফেলতে পারেনি।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে গেছেন।বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন বাস্তবায়নে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। দেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তর করছেন। দেশে আজ শতভাগ বিদ্যুৎ। সব কিছু হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জন্য। বঙ্গবন্ধু কন্যা যখন দেশে এসেছেন তিনি বলেছেন আমার জীবন যদি আমার পিতার মত চলে যায় তবুও আমি এ দেশের মানুষের জন্য কাজ করবো।

স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ’র সভাপতিত্বে ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু আল্লাহর এক ঐশ্বরিক দান, ছোট বেলা থেকে বঙ্গবন্ধুর আচরণ ছিলো অন্য রকম, তিনি ছোট বেলা থেকে উপকারী ছিলেন,হাজার বছরের সাধনার ফসল ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ থেকে ২টি আলাদা ভূখন্ড নিয়ে একটি দেশ গঠিত হয়। কিছুদিন যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু বুঝতে পারেন পাকিস্তানিরা আমাদের শোষন করছে। সারা বাংলাকে সর্ব দিক দিয়ে পিছিয়ে ফেলার চেষ্টা করছে। তখন থেকে তিনি আন্দোলন শুরু করেন। পাকিস্তানিরা বুঝতে পারে, বঙ্গবন্ধু তাদের জন্য বিপদ জনক। তাই তারা বঙ্গবন্ধুকে সরিয়ে দেওয়ার নানা চেষ্টা করে।কিন্তু তারা সফল হয়নি। তাঁর ডাকে মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে নিয়ে আসে স্বাধীনতার লাল সূর্য।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু তার জীবনের ৪৬৮২ দিন জেলে কাটিয়েছেন। তিনি তার জীবনের সব কিছু দেশের মানুষের জন্য বিলিয়ে দিয়েছেন। তিনি চেয়েছেন এ দেশের মানুষ দুমুঠো খেয়ে বেঁচে থাকুক। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি সেটি মেনে নিতে পারেনি। তারা ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু কে স্বপরিবারে হত্যা করে। তারা চেয়েছে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে দেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মুছে ফেলতে। দেশকে পুনরায় পাকিস্তানের আদলে গড়তে।কিন্তু তারা সফল হয়নি। আজ দেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এমপি,বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলাম লেখক সুভাষ সিংহ রায়, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলী খান।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগম এমপি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, জাতীয় পরিষদ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণসহ গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, রাজবাড়ী, খুলনা জেলা, খুলনা মহানগর, বাগেরহাট, মাগুরা, নড়াইল ও পিরোজপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা।